সংসদ ছেড়ে ফিরতেই হবে সুকান্ত, দিলীপদের, এক সন্ধ্যার জন্য কলকাতায় রাজ্যের সাংসদ, চার মন্ত্রীও

লোকসভার বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার। কিন্তু এখন ঠিক হয়েছে, শনিবার ছুটির দিন হলেও চলবে অধিবেশন। দ্বিতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের শেষ অধিবেশনে একের পর এক বিল পাশ হচ্ছে। বুধবারও অনেক রাত পর্যন্ত চলেছে লোকসভা। বৃহস্পতিবারও চলবে। তবে বাংলার আট সাংসদকে বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যেই কলকাতায় ফিরে আসতে হবে। সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে আসছেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল।

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দুপুরের বিমানেই দিল্লি ছেড়ে কলকাতায় চলে আসবেন। আসছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। সেই সঙ্গে আসতে হবে রাজ্য বিজেপির দুই সাংসদ, সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং জ্যোতির্ময় মাহাতোকে। সেই সঙ্গে রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়া সুভাষ সরকার, নিশীথ প্রামাণিক, শান্তনু ঠাকুর এবং জন বার্লাও কলকাতায় ফিরবেন।

প্রসঙ্গত, রাজ্য সভাপতি-সহ এই আট জন সাংসদই সদ্য তৈরি হওয়া বিজেপির নির্বাচনী কমিটির সদস্য। ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়াতেই সেই কমিটি তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার কোনও বৈঠক হয়নি। সংসদে বাজেট অধিবেশন চলার মধ্যেই ওই কমিটি তৈরি হয়। আর কমিটি তৈরির পরে পরেই সকলে দিল্লি চলে গিয়েছেন। এই অধিবেশন বিজেপির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণে আগেই দলের পক্ষে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, প্রতি দিন সাংসদদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। তাই বৃহস্পতিবার সংসদে উপস্থিত থাকার পরে কলকাতায় বৈঠকে যোগ দিতে আসা আট সাংসদকে শুক্রবার সকালে ফিরে যেতে হবে দিল্লি। সাধারণ ভাবে শুক্রবার বিকেলের দিকে সাংসদরা নিজের নিজের রাজ্য ফিরে যান। কিন্তু এ বার নির্দেশ রয়েছে শনিবার পর্যন্ত থাকতে হবে। কারণ, ওই দিন লোকসভায় ইউপিএ জমানার শ্বেতপত্র প্রকাশ করার কথা।

কিন্তু আচমকা বৃহস্পতিবারই বৈঠক ডাকা হল কেন? অধিবেশন শেষের পরেই তো তা করা যেত। এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘সুনীল বনসল বাংলা ছাড়াও তেলঙ্গানা এবং ওড়িশার দায়িত্বে রয়েছেন। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে গোটা দেশের যুব মোর্চার কাজকর্ম দেখার দায়িত্বও তাঁর উপরে। ফলে ব্যস্ত সূচির মধ্যে তিনি এই দিন সন্ধ্যাটাই বাংলার জন্য দিতে পারছেন।’’

বিজেপির নির্বাচন পরিচালন কমিটি মোট ২০ জনের। এই আট জন ছাড়া বাকিরা সকলেই কলকাতায় রয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার বৈঠকে হাজির থাকবেন রাজ্যের আরও তিন সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল, দীপক বর্মণ এবং জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়াও থাকবেন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ধন্দ। থাকার কথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এবং মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনি পাত্রের। বৈঠকে থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।

বনসল এই কমিটিতে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে রয়েছেন। তিনি ছাড়াও বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্যের তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্যের পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে, দুই সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয় এবং আশা লাকড়ার। তাঁরাও বৃহস্পতিবার বিজেপির সল্টলেক দফতরের বৈঠকে যোগ দিতে আসছেন বলে জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুধবারই তৃণমূলের তরফে নির্বাচনের আগে বিশেষ বৈঠকের ঘোষণা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে রাজ্যের সব সাংসদ, বিধায়ক ও জেলা সভাপতিকে নিয়ে বৈঠক করবেন। মনে করা হচ্ছে, লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি নিয়েই মূলত আলোচনা হবে অভিষেকের বৈঠকে। আর সেই ঘোষণার পরের দিনই বিজেপির নির্বাচন পরিচালন কমিটির প্রথম বৈঠক বসতে চলেছে। যদিও বিজেপি নেতাদের দাবি, তৃণমূলের বৈঠকের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.