লক্ষ্মীর ভান্ডার সহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক প্রকল্পের দৌলতে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের জয়জয়কার বলেই অনেকের মত। কিন্তু বিজেপির কর্ম সমিতির বৈঠকে এই সব কিছুর প্রভাব কাটিয়ে আসল সত্যকে মানুষের সামনে তুলে ধরে কিভাবে নিজেদের দিকে জনমত ঘোরাতে হবে তার পথ বাতলে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
বাংলায় বিজেপির ফল আশানুরূপ হলো না কেন? সেই কারণ খুঁজতে সায়েন্স সিটিতে বৈঠকে বসেছিল বঙ্গ বিজেপি। সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীদের পাশাপাশি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সংগঠনের নেতা সুনীল বনসল, মঙ্গল পান্ডে, মনোহরলাল খট্টর, অমিত মালব্যরা। তাদের উপস্থিতিতেই সুকান্ত মজুমদার বলেন, অনেকেই বলছেন লক্ষীর ভান্ডারের প্রভাবে ভোট পড়েছে তৃণমূলের তরফে। তাঁর মতে এটা একটা কারণ হতেই পারে। কিন্তু শাসক দলকে চাপে ফেলার মত একাধিক ইস্যুও ছিল।
নিয়োগ দুর্নীতির দায়ে প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেলে যাওয়ার ঘটনা, পার্থ ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ৫০ কোটিরও বেশি টাকা উদ্ধার, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের রেশন দুর্নীতি, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে বাঁচতে তৃণমূল বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার পুকুরে মোবাইল ছুড়ে ফেলা, নির্বাচনী প্রচার থেকে রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীদের অপমানিত করার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। সুকান্ত মজুমদারের কথায় অনেক ইস্যু ছিল, কিন্তু সেগুলো মানুষ বোধ হয় বেশি দিন মনে রাখেনি। ফলে এই মনে রাখার কাজটাই আমাদের করতে হবে। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বলতে হবে। মা হয়তো এক হাজার টাকা পাচ্ছে, কিন্তু ছেলেকে ভিন রাজ্যে কাজে যেতে হচ্ছে। আর যে হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে সেটা পেট্রোল ডিজেল, মদ, ইলেকট্রিক, সবজির দাম বাড়িয়ে ঘুর পথে নিচ্ছে এই সরকার। তৃণমূলের রোলটা অনেকটা পকেটমারের মত। সামানে হাজার বারোশো টাকা দিচ্ছে ঘুর পথে আবার পকেট ফাঁকা করে দিচ্ছে।
ভোট বিপর্যয় নিয়ে মিডিয়া যা প্রচার করছে তাতে কর্ণপাত করার দরকার নেই বলে মনে করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। তাঁর মতে, এতে মনোবল ভেঙে পড়তে পারে। এরপরই লোকসভা ভোটের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সুকান্ত মজুমদার বোঝাতে চেয়েছেন, বিজেপি হেরে গেলেও হারিয়ে যায়নি। সুকান্ত মজুমদারের কথায়, সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে বিজেপি গতবারের চেয়ে ছয়টি আসনে পিছিয়ে গেছে, কিন্তু এটা সাময়িক একটা স্টপেজ। এটা গন্তব্য নয়। গন্তব্য নবান্নের উপরে গৈরিক পতাকা তোলা। একুশের ভোটে ৩৭.৯৭ শতাংশ থেকে বেড়ে এবার আমাদের প্রাপ্ত ভোট ৩৮.৭৩শতাংশ। ১২১টি পুরসভার মধ্যে ৬৯টি’তে আমরা এগিয়ে। ৯০টি বিধানসভায় এগিয়ে। কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে তিন থেকে বেড়ে এখন ২৪টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে।