Sukanta Majumdar, BJP, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ২৭-র নবান্ন অভিযানের উদ্যোক্তা নই, কিন্তু আন্দোলনে সমর্থন আছে: সুকান্ত মজুমদার

মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযান ঘিরে পারদ এখন তুঙ্গে। স্বঘোষিত এই সংগঠনের ডাকে নবান্ন অভিযান ঘিরে নানা জল্পনা এখন রাজ্য রাজনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে নবান্ন অভিযানকে একেবারে স্পষ্ট ভাষায় সমর্থন জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তবে তারই সঙ্গে তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন ছাত্রসমাজ নামে ওই সংগঠনের নবান্ন অভিযানের কর্মসূচির উদ্যোক্তা কখনোই বিজেপি নয়।

পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নামে একটি সংগঠন এই অভিযানের ডাক দিয়েছে। অভিযানকে সংগঠনের তরফে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক বলে দাবি করা হয়েছে। তাদের মূল দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ এবং নির্যাতিতার বিচার। এই অভিযানে কি বিজেপি সামিল হচ্ছে? সেই প্রশ্নের উত্তরই সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে সুকান্ত মজুমদার দিয়ে বলেন, এই আন্দোলন বিজেপির আন্দোলন নয়, বিজেপি আন্দোলনের উদ্যোক্তা নয়। তবে এই ধরনের যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিজেপির সমর্থন আছে থাকবে। প্রয়োজনে আমরা দলমত নির্বিশেষে সমর্থন করবো, কিন্তু আমরা এই আন্দোলনের উদ্যোক্তা নই।

এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযান ঘিরে একাধিক ভিডিও প্রকাশ্যে এনে দাবি করেছে সামাজিক মাধ্যমে মানুষকে রাগিয়ে দিয়ে অশান্তি তৈরির চেষ্টা চলছে। ওই ভিডিওর ওপরে ভিত্তি করে বিজেপির দুই নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। এটা অশান্তি তৈরি চেষ্টা দাবি করে সাধারণ মানুষকে চক্রান্তের ফাঁদে পা দিতে না বলেছেন রাজ্য পুলিশ।

কিন্তু তৃণমূল প্রকাশিত ভিডিও প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমাদের মনে হয়েছে এই ভিডিও নকল। ইচ্ছে করে তৈরি করা হয়েছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। ছাত্রদের ভয় দেখাতে এটা করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, এইরকম গণতান্ত্রিক আন্দোলন সিপিএম করলেও বিজেপি সমর্থন করবে। এভাবে ভয় দেখিয়ে ছাত্র আন্দোলনকে ধ্বংস করা হবে, ছাত্রদের উপর দমন পীড়ণ করা হবে, তাহলে পরবর্তীকালে বিজেপি নবান্ন অভিযান করবে। পুলিশের উদ্দেশ্যে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, “ওই ভিডিওটি নিয়ে কি বলবেন? যেখানে দেখা যাচ্ছে সেমিনার হলে ক্রাইম সিনে মেলার মতো ভিড়। ঐরকম ভাবে ভিড় থাকলে লোকজন যাতায়াত করলে আর কোনো প্রমাণ অবশিষ্ট থাকে?”

সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণ-আন্দোলনকে দেখে ভয় পেয়েছেন। তাই মেঘের আড়ালে লুকিয়ে তীর চালাচ্ছেন। সামনে এসে লড়ার সৎ সাহস নেই। পুলিশকে সামনে করেছেন।

সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, ভারত- পাকিস্তান যুদ্ধ হলে সীমান্তে যত না ব্যারিকেড করা হবে তার থেকে বেশি ব্যারিকেড রাজ্য পুলিশ দিচ্ছে। ভয়ের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দাবি করেন, পুলিশ তৃণমূল একই সুরে কথা বলছে, উভয়েই বলছে অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হবে। তাতে আইন শৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে। সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, আইন শৃঙ্খলার আইজি বেআইনি উশৃঙ্খলায় পরিণত হয়েছে। পুলিশ রাজনৈতিক দলের কাজ করছে।

২৭ আগস্ট যে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে তাতে রাজনীতির রং আছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পুলিশের কর্তারা। পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের এক সদস্য শহরের পাঁচ তারা একটি হোটেলে রাজনৈতিক এক নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে পুলিশের দাবি। এই পরিস্থিতিতে সিপিএম জানিয়েছে, তারা এই কর্মসূচিতে নেই। অধীর চৌধুরী আগেই জানিয়েছেন, ছাত্রদের অধিকার আছে পথে নেমে প্রতিবাদ করার। এরপর সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার জানিয়ে দিলেন আমরা উদ্যোক্তা না হলেও আন্দোলনে সমর্থন আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.