কালীপুজোর বিসর্জনে কলকাতার রাজাবাজারে হিংসার ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন সম্প্রচার করায় মাধ্যম নামে একটি পোর্টালের দুই সংবাদিককে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একাধিক কম্পিউটার। ঘটনাকে গণতন্ত্রের উপর হামলা বলে উল্লেখ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
তিনি বলেন, কেন্দ্রে ক্ষমতা নেই বলে ইন্দিরা গান্ধীর মত এমার্জেন্সি জারি করতে পারছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, এই ঘটনা গণতন্ত্রের উপর হামলা ছাড়া আর কিছুই নয়। যেভাবে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের পুলিশ গ্রেফতার করা থেকে শুরু করে ল্যাপটপ নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেটা একেবারে এমার্জেন্সির সমান। আমাদের মনে হচ্ছে ইন্দিরা গান্ধী একসময় এমার্জেন্সি লাগু করেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় নেই তাই উনি পারছেন না। ক্ষমতায় থাকলে তিনিও এমার্জেন্সি জারি করে দিতেন।
সুকান্ত মজুমদার আরো বলেন, এটা গণতন্ত্রের উপর হামলা। সংবাদ মাধ্যম গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সাংবাদিক গ্রেপ্তার মানে গণতন্ত্রের উপর হামলা। উগ্রপন্থীদের সঙ্গে পুলিশের যে ধরনের আচরণ করা উচিত সেই ধরনের আচরণ কি সাংবাদিকদের সঙ্গে করা উচিত পুলিশের? আমরা তো কোনদিন দেখিনি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এরকম উগ্রপন্থীদের সঙ্গে আচরণ করছে।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টেও সাংবাদিকদের কাজের জায়গা থেকে তাদের গ্রেপ্তারের ভিডিও পোস্ট করে সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, রাষ্ট্রবাদী ডিজিটাল সংবাদ পোর্টাল “মাধ্যম” এর দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর কমিশনারেট। সাংবাদিকদের অপরাধ কালীপুজোর সময় বিভিন্ন পূজা মন্ডপে গোলমালের অভিযোগ উঠেছিল। স্বাধীন গণমাধ্যম হিসেবে তা তুলে ধরেছিলেন তারা। এটাই রাজ্যে স্বৈরাচারীর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে পশ্চিমবঙ্গে বিকশিত হওয়া অবাধ গণতন্ত্র। সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার নজির। উনি সারা দেশে সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে সর্বদা ঢাকঢোল বাজান, আর বাংলায় তার বিরুদ্ধে সরব হলেই হীরক রানী সেজে কোতোয়াল পাঠান। শুধু “মাধ্যম” নয় অতীতেও আরো কয়েকটি ডিজিটাল পোর্টালের ওপর বারংবার একই ধরনের গ্রেফতারি ও হয়রানি চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাতে আরো শক্তিশালী হয়েছে স্বাধীনচেতা সাংবাদিকরা। “মাধ্যম”ও মাথা উঁচু করে থাকবে। লড়াই থামবে না। গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে হীরক রানীর বিদায় অবশ্যম্ভাবী।