আরিয়াদহের গ্যাংস্টার জয়ন্ত সিংয়ের একের পর এক বিস্ফোরক ভিডিও প্রকাশ্যে আসছে। কখনো মা ছেলেকে পেটানো, কখনো ক্লাবের ভেতরে চ্যাংদোলা করে বেপরোয়া মারধর করা। কিন্তু এরপর জয়ন্ত সিং- এর বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার ভিডিও সামনে আসতেই দেশের নিরাপত্তার তথা দেশদ্রোহিতার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। জয়ন্ত সিং রাজ্যের শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করে তৃণমূলের তাবড় নেতাদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি তুলে ধরে সরব হয়েছে বিজেপি। বঙ্গ বিজেপি সভাপতির দাবি, এটা তৃণমূলের তালিবানি শাসন চলছে রাজ্যে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতবর্ষের মধ্যে পশ্চিম বাংলা দেশ বলে আলাদা দেশ তৈরি করতে চাইছেন। তাঁর দাবি, অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া মানে প্যারালাল আর্মি তৈরির চেষ্টা, যা দেশদ্রোহিতার মতো বড় অপরাধ।
জয়ন্ত সিংয়ের যে ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে বাপ্পা নামে এক তৃণমূল কর্মীকে বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন জয়ন্ত সিং। বিজেপির তরফ থেকে সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। (যদিও ভিডিও’র সত্যতা যাচাই করেনি আমাদের ভারত।)
তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসেবে আড়িয়াদহে পরিচিত জয়ন্ত সিং তৃণমূল কর্মীদের বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এটা কি তালিবানি রাজত্বের প্রতিচ্ছবি? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে এসেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই পশ্চিমবঙ্গকে ভারতবর্ষের মধ্যে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে বা পশ্চিমবাংলা দেশ হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা করছেন। আর এই ধরনের ঘটনায় সেটা প্রমাণিত হচ্ছে।” তাঁর কথায়, যেভাবে জয়ন্ত সিং মানুষের উপর অত্যাচার শুরু করেছে, সাধারণ মানুষকে পেটানো হচ্ছে, মাকে ছেলেকে পেটানোর মতো ঘটনা ঘটছে, অস্ত্র চালোনার ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে অবাক করার মতো ঘটনা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ভারতবর্ষের অন্য কোনো রাজ্যে এটা হয় বলে আমার জানা নেই।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি প্রশ্ন তুলেছেন, সৌগত রায় বলছেন জয়ন্ত মদন মিত্রের কাছের লোক, আর মদন মিত্র বলছেন সৌগত রায়ের কাছে লোক। এখন জয়ন্ত সিংকে নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে। জয়ন্ত সিং আসলে কার কাছের লোক সেটা গোটা বাংলা জানতে চাইছে।
অভিযোগের সুরে সুকান্ত মজুমদার বলেন, এরা অমানবিক অত্যাচার করে। আর এই জয়ন্ত সিং ও তার দলবলরাই ১০০ দিনের কাজের দাবি নিয়ে অভিষেক ব্যানার্জির সাথে দিল্লি গিয়েছিল। এরা কি ধরনের ১০০ দিনের কাজ করে? মানুষ পেটানোর ১০০ দিনের কাজ করে?
সুকান্ত মজুমদারের দাবি, এরা অস্ত্র চালনার ট্রেনিং দিচ্ছে। এদের সবার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হওয়া উচিত। এটা দ্বিতীয় তালিবান বা তৃণমূল তালিবান। বিজেপি নেতার কথায়, আফগানিস্তানের তালিবানরা জোব্বা পরে, দাড়ি রাখে। এরা প্যান্ট, শার্ট, জিন্স পরে এটাই যা পার্থক্য।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় এরকম ছোট ছোট তালিবানি এলাকা তৈরি করার চেষ্টা চলছে। এটা কোনো নতুন ঘটনা নয়। বিভিন্ন জায়গাতেই তৃণমূল দুষ্কৃতিদের ব্যবহার করে উপদ্রব চালানো হয়। নির্বাচনের সময়ও এদের ব্যবহার করা হয়। তাঁর দাবি, গ্যাংস্টার জয়ন্ত, মদন মিত্রের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। কারণ মদন মিত্রের পুত্রবধূর যিনি কাউন্সিলর তাঁর জন্মদিনে গিয়ে পার্টি করতে দেখা গেছে জয়ন্ত সিংকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ, “তৃণমূলের আমলে গুন্ডা, মাফিয়া ক্ষমতা প্রদর্শন করে বেড়াচ্ছে। এরা দেশদ্রোহিতার কাজ করছেন। এদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের আইনে মামলা হওয়া উচিত। অস্ত্র চালানো শেখানো মানে প্যারালাল আর্মি তৈরি করার চেষ্টা চলছে।”