Sukanta, BJP, বেলডাঙা যাওয়ার পথে আটক সুকান্ত! পুলিশের বন্দুক কি অভিষেকের মেয়ের বিয়েতে ফাটানোর জন্য, ক্ষোভ উগড়ে দিলেন মন্ত্রী

বেলডাঙা যাওয়ার পথে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে বাধা দেয় পুলিশ। বাধা পেয়ে রাস্তায় বসে পড়েন তিনি। তারপর তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে ছাড়াও বিজেপির কয়েকজন নেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার প্রতিবাদে একাধিক জায়গায় পথ অবরোধ করে বিজেপি।

মুর্শিদাবাদ যাওয়ার পথে ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে সুকান্ত মজুমদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সুকান্ত মজুমদার সহ বিজেপি কর্মীদের কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয় প্রিজন ভ্যানে। এদিন পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “পুলিশ চুপচাপ লাঠি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বন্দুক কেন রাখা হয়েছে? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ের বিয়েতে ফাটানোর জন্য? নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে প্রতিবছর কালীপুজো হয় সেখানে ফাটানোর জনা?অগণতান্ত্রিক উপায়ে কাজ করছে পুলিশ। পরিস্থিতি সামলাতে শূন্যে গুলি পর্যন্ত চালায়নি পুলিশ।

মুর্শিদাবাদে যা ঘটেছে তার প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা ছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতির। সে খবর প্রশাসনের কাছে ছিল। জাতীয় সড়ক ধরে কৃষ্ণনগরের দ্বিজেন্দ্রলাল সেতু পার হবার কথা সুকান্ত মজুমদারের। তার আগেই পুলিশ ব্যারিকেড করে রাস্তা আটকে দেয়। কনভয় দ্বিজেন্দ্রলাল সেতুতে পৌঁছালে তাকে আটকে দেওয়া হয়। প্রথমে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় পুলিশের। তারপর শুরু হয় বচসা।‌ শেষে প্রতিবাদে রাস্তায় বসে পড়েন সুকান্ত মজুমদার সহ বিজেপি নেতা কর্মীরা। এরপর তাদের গ্রেপ্তার করার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।

সুকান্ত মজুমদার প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেন, প্রশাসন পুরোপুরি অগণতান্ত্রিক উপায়ে কাজ করছে। তৃণমূল আর প্রশাসন আলাদা নয়। আধ ঘন্টা রাস্তায় বসার পর কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার পুলিশ বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি আরো কয়েকজন বিজেপি কর্মীও গ্রেপ্তার হয়। তাদের সবাইকে পুলিশ ভ্যানে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার পর জেলার বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করে বিজেপি।

গত শনিবার বেল ডাঙায় হিংসাত্মক সংঘর্ষ হয়।বিজেপির অভিযোগ, ওই এলাকায় হিন্দুদের উপর হামলা হয়েছে। সেখানে রক্তারক্তি কান্ড ঘটেছে। ঘটনার পর বেলডাঙায় যেতে চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজিকে চিঠি দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়নি তাকে। এরপর আজ সুকান্ত মজুমদার রওনা হন বেলডাঙার উদ্দেশ্যে। কিন্তু তাকে কৃষ্ণনগরে আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাদের এই সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, গত রবিবার থেকে বেলডাঙায় গুন্ডামি চলেছে। গতকাল রাতে একটু শান্তিতে কেটেছে বলে আমার কাছে খবর আছে। খবর চেপে দেওয়ার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। পুরোটাই প্ল্যান মাফিক করা। আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম যে, আমরা বেলডাঙায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে গিয়ে কার্তিক মহারাজের সঙ্গে কথা বলব। তারপর আবার ফিরে আসবো। প্রয়োজনে পুলিশকে তাদের এস্কট করে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলাম, কিন্তু পুলিশ রাজি হয়নি।

বেলডাঙার ঘটনায় গোটা মুর্শিদাবাদ সহ চার জেলায় ইন্টারনেট বন্ধ করে রেখেছে রাজ্য সরকার বলে দাবি বিজেপি নেতা অমিত মালব্যের। গোটা ঘটনা চাপা দিতে এই কাজ করা হয়েছে বলে মনে করছে বিজেপি। বেলডাঙ্গার হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়েছে রাজভবন। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এখন।

এদিকে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, বিজেপি বিধায়করা বেলডাঙায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। ক্ষতিগ্রস্তদের আইনি সাহায্য দেওয়া হবে। যতো দোকান ভাঙ্গচুর হয়েছে বিজেপি এবং সনাতনীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। যতগুলি মন্দির ভাঙ্গচুর হয়েছে সেখানে পুনঃসংস্কারের কাজ হবে। অর্থ দেবেন বিজেপি বিধায়করা। তারা তাদের বেতন থেকে অর্থ দিয়ে বেলডাঙায় ভাঙ্গচুর হওয়া মন্দির সংস্কার করাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.