মুর্শিদাবাদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দাগলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, এই ঘটনা আবার প্রমাণ করে দিল পশ্চিমবঙ্গ দুষ্কৃতিদের স্বর্গরাজ্য। বারুদের স্তূপের উপর থাকা পশ্চিমবঙ্গের কোনো নাগরিক আর সুরক্ষিত নয় বলে দাবি করেছেন সুকান্ত মজুমদার।
বাংলাদেশে অশান্তির আবহে মুর্শিদাবাদের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা প্রসঙ্গ সুকান্ত মজুমদার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “রাজ্যের পুলিশ বিভাগে ব্যর্থ। মুখ্যমন্ত্রী যতই বিরাট রদবদল করুন না কেন, দুষ্কৃতিদের কাছে পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র প্রমাণিত স্বর্গরাজ্য। বারুদের স্তূপে পশ্চিমবঙ্গের কোনো নাগরিকই আর সুরক্ষিত নয়।”
তিনি আরো লিখেছেন, “বোমা তৈরীর অবৈধ কারবার চালাতে গিয়ে গতকাল রাতে মুর্শিদাবাদে বিরাট বিস্ফোরণে উড়ে যায় একটি বাড়ির চাল। ঘটনায় তিনজন কুখ্যাত দুষ্কৃতির প্রাণ গিয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের বাড়িগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ হাস্যকর বিষয় এটাই, দীর্ঘদিন ধরে বোমা তৈরীর কুটির শিল্প এই জায়গায় চললেও রাজ্য পুলিশের কাছে কোনো খবরই ছিল না।” কটাক্ষ করে তিনি লিখেছেন, রাজ্যে শিল্প ঢুকছে না বলেই কি বোমা শিল্পের অবৈধ স্বীকৃতি দিতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এখন দুষ্কৃতিদের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দিচ্ছে?”
রবিবার রাতে, বাংলাদেশ সীমান্তে মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া থানার ধনিরামপুরের খয়ড়াতলা এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। আর এর ফলে উড়ে যায় বাড়ির ছাদ। রাত এগারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বাড়ির আশপাশে দেহের অংশ ছিটিয়ে পড়ে। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায় স্থানীয়দের। ঘটনাস্থল থেকে আহত তিনজনকে উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান একজনের মৃত্যু হয়েছে ঘটনাস্থলেই। বাকি দু’জনের মৃত্যু হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের যাওয়ার পর। স্থানীয়দের দাবি, ওই বাড়িতে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। এই উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক যথেষ্ট উন্নত মানের বলেই জানিয়েছেন তারা। কোথা থেকে এতো বিস্ফোরক এলো তা এখনো স্পষ্ট নয়। রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই বিস্ফোরণে এনআইএ তদন্তের দাবি করেছেন।
মুর্শিদাবাদের এই বোমা বিস্ফোরণে বাংলাদেশের যোগ রয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে। যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে সাকিরুলের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগ রয়েছে বলে খবর। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে ফেনসিডিল পাচার চক্রের সঙ্গে যোগ ছিল সাকিরুলের। এই বিস্ফোরণের সঙ্গে সেই বিষয়টির যোগ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।