উৎসবের মরশুমে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী সরকারের তৈরি টাস্ক ফোর্স। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে হিমঘর ফাঁকা করতে বলা হল ব্যবসায়ী এবং হিমঘর মালিকদের। পুজোর সময় বাজারে জোগান বাড়াতে মজুত থাকা আলু পর্যাপ্ত পরিমাণে ছাড়তে বলা হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার নবান্নে টাস্ক ফোর্সের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, হিমঘরে আলু মজুত রেখে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানো যাবে না।
তথ্য বলছে, এখনও ২২ লক্ষ মেট্রিক টন আলু মজুত রয়েছে রাজ্যের হিমঘরগুলোতে, যা প্রয়োজনের অতিরিক্ত। ফলে আলুর দাম বাড়ার কথা নয়। সেকথা স্মরণ করিয়ে আলু সংগঠনের নেতৃত্বকে সতর্ক করা হয়েছে। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, কৃষি দপ্তরের আধিকারিক-সহ টাস্ক ফোর্স, আলু ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা। বৈঠকে অন্যান্য সবজি-আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণ নিয়েও আলোচনা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ‘সুফল বাংলা’র স্টল বাড়ানোর উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, কাউন্সিলর এবং বিধায়করা নিজেদের এলাকায় জায়গা চিহ্নিত করে দিলেই সেখানে ‘সুফল বাংলা’র স্টল খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। গত তিন মাসে ৮০টি নতুন ‘সুফল বাংলা’ স্টল খোলা হয়েছে। ফলে মোট স্টলের সংখ্য এখন ৬৪২টি।
সরাসরি চাষির ঘর থেকে জিনিস কিনে সুফল বাংলায় ন্যায্যমূল্যে সবজি, আনাজ বিক্রি করছে সরকার। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, ভিনরাজ্য থেকে আসা লঙ্কা, পিঁয়াজ, টমেটোর জোগান ক্রমশ বাড়ছে। লঙ্কার ক্ষেত্রে যে সমস্ত জেলায় দাম বেশি সেখানে অন্য জেলা থেকে সুফল বাংলার মাধ্যমে তা পাঠানো হচ্ছে। তবে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে আলুর দাম কমানোর উপর। পুজোর আগে প্রতি বছরই জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। এবার যেন একটু বেশিই বেড়েছে। একাধিক জেলায় বন্যা হয়েছে। আর সেই অজুহাতে কলকাতা, জেলা এবং শহরতলির বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া থেকে মূলত কলকাতায় সবজি আসে। হাওড়া, হুগলির একাংশ বাদ দিলে আর কোথাও তেমন বন্যায় ক্ষতি হয়নি। তাও দাম বেড়েছে একশ্রেণির ফড়েদের কালোবাজারির কারণে।
অধিকাংশ সবজির দামই ১০০ টাকা ছু্ঁইছুই। পুজোর সময় তা আরও বাড়তে পারে। তাই দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের তরফে এদিন নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘‘আলু-সহ অন্যান্য সবজি আনাজপাতির দাম নিয়ন্ত্রণে টাস্ক ফোর্সের নজরদারি বাড়ানো হবে। আর বাজারে আলুর জোগান বাড়াতে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত হিমঘর ফাঁকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মেয়াদ একদিনও বাড়ানো হবে না।’’