নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষায় বহু সাদা খাতা জমা দেওয়া হয়েছে। কিছু খাতায় শুধুমাত্র ৫-৬টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। তার পরও পরীক্ষার্থী নম্বর পেয়েছেন ৫৩। এ ছাড়া গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি তেও একই জিনিস হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে পেশ করা রিপোর্টে এ কথা জানাল সিবিআই।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য ওই অনিয়মের সময় এসএসসির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন বলেও জানিয়েছে সিবিআই। সেই সঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়েছে, সুবীরেশের কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক থেকে এ সংক্রান্ত নানা তথ্য মিলেছে।
সিবিআইয়ের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে বুধবার আদালতের নির্দেশ— সিবিআইয়ের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে বেআইনি উপায়ে কত জন সুপারিশপত্র এবং নিয়োগপত্র পেয়েছেন তা নিশ্চিত করবে স্কুল সার্ভিস কমিশন। এ ছাড়া মামলাকারীর আইনজীবীরাও কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে অবৈধ ভাবে নিযুক্তদের সংখ্যা খুঁজে বার করবে বলে জানান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
সিবিআই তদন্তের অগ্রগতি নিয়েও বুধবার সন্তোষপ্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সিবিআই নিঃশব্দে দিল্লি ও গাজিয়াবাদে হানা দিয়ে যে ভাবে মূল নথি উদ্ধার করতে পেরেছে। তার পর তারা স্কুল সার্ভিস কমিশনের তথ্যর সঙ্গে যাচাই করছে। তাদের তদন্তের প্রশংসা করছি।’’
একই সঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘‘এ বার মূলচক্রীকে সিবিআই খুঁজে বার করতে পারবে বলে আদালত আশাবাদী। দেশকে বাঁচাতে সিবিআই আধিকারিকদের নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। যে কোনও ভাবেই দেশকে বাঁচাতে হবে, সে জন্যই সিবিআই, ইডি এবং অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাগুলি আছে।’’
জেল হেফাজতে থাকা সুবীরেশকে প্রয়োজনে আবার হেফাজতে নিয়ে জেরা করার জন্যও সিবিআইকে বুধবার ‘পরামর্শ’ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে খোঁজ নেন, বিশেষ সিবিআই আদালতে তাঁর ‘জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা’ নিয়েও। প্রসঙ্গত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিবিআই গ্রেফতার করেছিল সুবীরেশকে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়া সংক্রান্ত অভিযোগ উঠেছিল। এসএসসি সংক্রান্ত বাগ কমিটির রিপোর্টেও নাম ছিল এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যানের। বস্তুত, যে সময়ে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, সেই সময়ে এসএসসির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন সুবীরেশ।