বহু দিন ধরে র্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছিলেন অসমের ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া। আর সহ্য করতে না পেরে হস্টেলের দোতলা থেকে ঝাঁপ দিলেন আনন্দ শর্মা নামের ওই ছাত্র। পুলিশ সূত্র খবর, ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র তিনি। সোমবার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্ত ৪ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে ডিব্রুগড় পুলিশ।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই ঘটনা প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে টুইট করেছেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘‘র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া আহত হয়েছেন। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের এই বিষয়ে সহায়তা কাম্য। অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আহত পড়ুয়ার চিকিৎসার খরচ দেওয়া হয়েছে। র্যাগিং যাতে বন্ধ হয়, এই বিষয়ে আবেদন জানাচ্ছি।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, আনন্দের মা সরিতা শর্মা ডিব্রুগড় থানায় ৪ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সরিতা পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘‘আমার ছেলে বলেছিল, ৪ মাস ধরে ওকে র্যাগিং করা হচ্ছে। গত কাল রাতে আমাকে ফোন করে জানায়, ও সকালে হস্টেলে যাবে। সারা রাত ধরে নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়ররা ওর উপর অত্যাচার করেছে।’’ সরিতা জানান, কয়েক মাস ধরেই আনন্দের উপর অত্যাচার করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়ররা। মারধর করতেন, জোর করে টাকাপয়সাও নিয়ে নিতেন তাঁরা। এমনকি, খুনের চেষ্টাও করেছিলেন আনন্দকে, অভিযোগ সরিতার।
সরিতা আরও জানান, আনন্দের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়ররা। আনন্দের হাতে মাদক দ্রব্য ধরিয়ে জোর করে ছবিও তুলিয়েছেন তাঁরা। সরিতার অভিযোগের ভিত্তিতে ডিব্রুগড় পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তদের মধ্যে ১ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, বাকি ৩ জন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও পড়াশোনা করেন। সূত্রের খবর, ১৭ নভেম্বর আনন্দ এই ৪ জনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পুলিশ এখনও তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে সূত্রের খবর।