ছুটির দিন দুপুরে মর্মান্তিক কাণ্ড। তিন বন্ধু মিলে বেড়াতে গিয়ে ড্যামের জলে তলিয়ে গেল ২ জন। স্থানীয় মানুষজনের তত্পরতায় প্রাণে বাঁচল তৃতীয়জন। মৃত ২ জন নবম শ্রেণির পড়ুয়া। দুপুরে টিউশন যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল এক ছাত্র। পরে সে অন্য দুজনকে ডেকে নিয়ে ড্যাম দেখতে যায়। তার পরেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
রবিবার সকাল দশটা নাগাদ টিউশন পড়েতে যাওয়ার নাম করে মায়ের কাছ থেকে স্কুটি চায় খড়গপুর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আরিয়ান পাসোয়ান। সেই স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে যায় খড়গপুর ইন্দা নিউ ট্রাফিক এলাকার বাসিন্দা আরিয়ান। পুলিস সূত্রে খবর বাড়ি থেকে বেরিয়েই সে ফোন করে তার দুই বন্ধু পীয়ূষ পাসোয়ান ও আর্য বেরাকে ডেকে নেয়। এরপর তিন বন্ধু মিলে স্কুটিতে সওয়ার হয়ে পৌঁছে যায় মেদিনীপুর শহরের অদূরে মেদিনীপুর-খড়গপুরের সংযোগস্থল কংসাবতী নদীর উপর তৈরি অ্যানিকাট ড্যামে।
তদন্তে উঠে এসেছে সাঁতার না জানা সত্বেও আরিয়ান ড্যামের অনেকটা গভীরে নেমে যায়। কিন্তু সাঁতার না জানার কারণে সে জলে তলিয়ে যেতে থাকে। তা দেখেই তাকে বাঁচাতে জলে লাফ দেয় পীয়ূষ। জলের তোড়ে দুজনেই তলিয়ে যায়। ওই দৃশ্য দেখে চিত্কার করতে থাকে আর্য। সেই চিত্কার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। প্রথমেই তাঁরা আর্যকে টেনে পাড়ে নিয়ে আসেন। পর তারাই উদ্যোগ নিয়ে পীয়ূষ ও আরিয়ানের দেহ উদ্ধার করে। ততক্ষেণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় কোতোয়ালি থানার পুলিস। দুই ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করে পাঠিয়ে দেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হালপাতালে। পুলিস সূত্রে খবর, পুলিস সূত্রে জানা গেছে, বছর ১৫-র ওই তিন কিশোরই খড়্গপুর শহরের ইন্দা নিউ ট্রাফিক এলাকার রেল কলোনির বাসিন্দা। তিনজনই পড়ত কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীতে। আরিয়ান ও পীয়ূষ আবার সম্পর্কে মামাতো-পিসতুতো ভাই। আরিয়ানের বাবা নেই। মা ও ভাই আছে। মা ঊষা পাসোয়ান পেশায় রেল কর্মী। তাঁর স্কুটি নিয়েই তিন বন্ধু রওনা দিয়েছিল। পীয়ূষের বাবা রাজেশ পাসোয়ান জানান, “আমিও রেলকর্মী। ডিউটিতে ছিলাম। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসি। ততক্ষণে সব শেষ! টিউশন পড়তে যাওয়ার নাম করে বেরিয়েছিল। এর বেশি আর কি বলব!”