স্ট্রেস ফ্র্যাকচার: যে ঘাতক চোটে বিপর্যস্ত যশপ্রীত বুমরা

শারীরিক ভাবে প্রচণ্ড চাপ পড়লে হাড়ে ক্ষতি হতে পারে। চোটের জায়গা ফুলে যেতে পারে। যাকে বলা হয় ‘স্ট্রেস ইঞ্জুরি’। যা এমআরআইয়ের মাধ্যমে চিহ্নিত করা যায়। ঠিক মতো বিশ্রাম না নিলে এই চোট বাড়তে থাকে।

স্ট্রেস ফ্র্যাকচার কী?

স্ট্রেস ইঞ্জুরি বাড়তে থাকলে হাড়ের উপরে যে মোটা স্তর আছে, তা ভেঙে যায়। ফ্যাসেট জয়েন্টের মধ্যে যে ছোট্ট হাড়ের টুকরোটা আছে, তার উপরে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে এবং তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর তখনই স্ট্রেস ফ্র্যাকচার হয়। সাধারণত যে হাতে বল করা হয়, তার উল্টো দিকের অংশে চোট লাগে। ডান হাতি পেস বোলারের ক্ষেত্রে বাঁ-দিকের কোমরের নীচের অংশে এই চোট লাগে।

কেন হয় স্ট্রেস ফ্র্যাকচার?

দীর্ঘ সময় ধরে হাড় এবং টিসুতে চোট লাগলে এই স্ট্রেস ফ্র্যাকচার দেখা দেয়। এটা গোড়ালি মচকানো বা হাত ভেঙে যাওয়ার মতো হঠাৎ দুর্ঘটনা নয়। একটা জায়গা কমজোরি হতে হতে এই অবস্থায় পৌঁছয়।

বেশি পরিশ্রম কি কারণ?

গাড়ির শক অ্যাবজর্ভারের মতো কাজ করে শরীরের পেশি। কিন্তু অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে শরীর যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, পায়ের পেশি যখন দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন এই ধাক্কাটা এসে লাগে হাড় এবং জয়েন্টে। পেশি দুর্বল হয়ে পড়ার অন্যতম কারণ অতিরিক্ত পরিশ্রম।

আর কোনও কারণ?

শরীরে ভিটামিন ডি আর ক্যালসিয়াম কম থাকলে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। তখন স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া কোনও বোলারের যদি পা, কোমর, কাঁধ বা অন্য কোনও অংশে সমস্যা থাকে, তা হলে সেই দুর্বলতা ঢাকার জন্য শিরদাঁড়ায় বাড়তি চাপ পড়ে। এ ছাড়া কোনও বিশেষ ডেলিভারি করার ক্ষেত্রেও শিরদাঁড়ার ওই বিশেষ অংশে বাড়তি চাপ পড়তে পারে।

সমস্যা কি বোলিং অ্যাকশনে?

যশপ্রীত বুমরার বোলিং অ্যাকশন ব্যতিক্রমী। বিশ্ব ক্রিকেটে দেখাই যায় না এই ধরনের বোলিং অ্যাকশন। মাইকেল হোল্ডিংয়ের মতো প্রাক্তনরা মনে করেন, এই অ্যাকশনে চোট লাগার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

সুস্থ হতে কত সময়?

নির্ভর করছে চোটের মাত্রার উপরে। শুধু ‘স্ট্রেস ইঞ্জুরি’ হলে ছ’সপ্তাহের মধ্যে সেরে যেতে পারে। কিন্তু স্ট্রেস ফ্র্যাকচার হলে ছ’মাসও লাগতে পারে। আবার শিরদাঁড়ার দু’পাশেই ফ্র্যাকচার হলে এক বছরও লেগে যেতে পারে।

আবার কি হতে পারে?

খুব সতর্ক থাকতে হবে চোট নিয়ে। তাড়াহুড়ো করে মাঠে নামলে ফের চোট লাগার আশঙ্কা থেকেই যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.