স্টিকার দিদি

“স্টিকার দিদি” নামটা মনে আছে তো? কারণ মনে আছে? মাননীয়ার কিছু প্রকল্প নিয়ে কথা বলা যাক। কিছু প্রকল্প এবং 2019 সালের তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো নিয়ে আলোচনা করার সময় আবার এসেছে। নিজেরা পড়বেন এবং সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন।

খাদ্য সাথী প্রকল্প:


খাদ্যসাথী প্রকল্পের চাল আসে NFSA এর অধীনে মানে বেশিরভাগটাই কেন্দ্রীয় সরকার দেয়। মাননীয়া নিজের নামে চালান।

বাংলার গ্রামীন সড়ক যোজনা


বেশিরভাগ টাকা কেন্দ্র সরকার দেয় এবং প্রকল্পের নাম হল প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা। মাননীয়া স্টিকার লাগিয়ে নাম করলেন বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা।

বাংলার গৃহ প্রকল্প


প্রত্যেকটা মানুষ যাতে নিজের বাড়ি পায় সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা চালু হয়. গ্রামীণ ক্ষেত্রে নাম পাল্টে মাননীয়া করে দেন বাংলার গৃহ প্রকল্প।

মিশন নির্মল বাংলা


মাননীয়ার অত্যন্ত পছন্দের এক প্রকল্প এটা। কিন্তু এটাও সেই স্টিকার মারা প্রকল্প। আসল প্রকল্প টি হল স্বচ্ছ ভারত মিশন । এই যোজনার সিংহভাগ টাকা কেন্দ্র দেয় কিন্তু মাননীয়া এখানেও স্টিকার লাগাতে ব্যস্ত।

আনন্দধারা প্রকল্প


মাননীয়া গ্রামীণ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য এই প্রকল্প চালু করেছেন। খুব ভালো, কিন্তু মানুষের কাজ করতে গেলে স্টিকার লাগানোর কি দরকার। এই প্রকল্পের আসল নাম হল আজিভিকা ( National rural livelihood mission) .

সবার ঘরে আলো


দিন্দয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনা আসল নাম কিন্তু এখানে আবার পশ্চিমবঙ্গ নাম পাল্টে ফেলল। মাননীয়া একটা স্টিকার প্রকল্প চালু করতে পারেন।

100 দিনের কাজ


সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় প্রকল্প। তাও যদি মাননীয়া ঠিকঠাক চালাতেন।

এরকম আরো কিছু আছে।

TMC ELECTION MANIFESTO 2019

এবার দেখে নেওয়া যাক 2019 লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো ( তৃণমূল কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন , মিলিয়ে দেখতে পারেন )

পুরো কাগজটার মধ্যে পাঁচবার মুসলমান , ১২ বার মাইনরিটি উল্লেখ আছে। থাক সেসব কথা এবার কিছু জরুরী জিনিস দেখা যাক।

46 নম্বর পাতা থেকে শুরু করা যাক।

  • বলা হয়েছিল রাজ্যের 90% মানুষ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পায়, আমরা কি 90% এর বাইরে ?
  • বাংলার ইন্ডাস্ট্রিয়াল নাকি ভারতবর্ষের থেকে 194 শতাংশ মানে প্রায় দু গুণ বেশি। ইন্ডাস্ট্রিগুলো কোথায় দেখেছেন আপনারা ?
  • কৃষি ক্ষেত্রে পশ্চিমবাংলার উন্নতি হলো ভারতের তুলনায় 247 শতাংশ মানে প্রায় আড়াই গুণ, বাংলা চাষি ভাইয়েরা দেখছে তো এটা ?

*100 দিনের কাজ গ্রাম বাংলার রাস্তা এবং গৃহ নির্মাণের কথা বলা হয়েছে, skill development এর কথা বলা হয়েছে, কিন্তু এটা সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ।

  • পশ্চিমবঙ্গের কৃষক ভাইদের আয় নাকি তিনগুণ হয়ে গেছে ? কৃষক ভাইয়েরা নাকি 2 লাখ টাকা করে পেয়েছেন ?

*মাটি উৎসব করা হয় প্রতিবছর কিন্তু সেই মাটি হবে কার কি হয়েছে ?

  • সিঙ্গুর দিবস এর কথা উল্লেখ আছে।
  • 49 নম্বর পাতায় স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক বড় বড় কথা আছে। বলা হয়েছে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে নাকি পশ্চিমবঙ্গের সাত কোটি লোক সুবিধা পেয়েছে।
    সংখ্যাটা খেয়াল করবেন সাত কোটি, সাত কোটির মধ্যে আপনার চেনাশোনা একজনও আছে কি ?

*50 নম্বর পাতায় ICDS, SARVA SIKSHA MISSION এর কথা বলা আছে, এই প্রকল্প গুলো কার সেটা বাচ্চা ছেলেরাও জানে।

52 নম্বর পাতায় পঞ্চায়েতের কথা হয়েছে.


100 দিনের কাজ, গ্রামবাংলায় ভিডিও নির্মাণ ইত্যাদির কথা হয়েছে। বলা হয়েছে 42 হাজার 126 কোটি টাকা খরচ হয়েছে 100 দিনের কাজে, 80 লাখ বাড়ি তৈরি করা হয়েছে এবং 26 হাজার রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু মাননীয়া প্রকল্পটা তো কেন্দ্রীয় সরকারের, টাকাও তারা দিয়েছে। আপনি এত ফলাও করে লিখছেন কেন ?

আরও একটা বড় মিথ্যে কথা আছে 57 নম্বর পাতায়।
পশ্চিমবঙ্গে ডিজিটাল রেশন কার্ড এর কাজ নাকি 100% পূর্ণ। মানে পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেকটা মানুষের ডিজিটাল রেশন কার্ড আছে, এখন অসুবিধা গুলো দেখা যাচ্ছে তো?
এত লোক বলছে ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই। কোনটা সত্যি ?

58 নম্বর পাতা থেকে আপনার মিথ্যে বলা আবার শুরু হয়েছিল।

Bengal global business summit 2019 এর হিসাবে নাকি 35 টা দেশ থেকে বিভিন্ন লোকজন এসেছেন এবং 85 টি MoU স্বাক্ষরিত হয়েছিল। আপনার ম্যানিফেস্টোতে আপনি লিখেছিলেন Rs. 2,84,288 কোটি টাকার লগ্নির কথা হয়েছে। সেই কাগজ গুলো কোথায় গেল ? কটা লগ্নি হল ?

অমৃতসর দিল্লি কলকাতা ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোর প্রজেক্ট কেন্দ্র সরকারের প্রকল্প আপনি গর্ব করছেন কেন? ওটা আপনার বানানো ?

ভোর সাগর নামে বন্দরটি নিয়ে আপনার ওই 72 পাতার কাগজে আছে। কিন্তু এটা কেন্দ্র সরকারের । আপনি নিজের সাফল্যের মধ্যে এটাকে কেন এনেছেন ?

আপনার ইশতেহারে দেখলাম এশিয়ান হাইওয়ের কথা আছে, ওটা আপনি বানিয়েছেন? মিথ্যে বলার একটা সীমা থাকা উচিত।

কাজী নজরুল ইসলাম এয়ারপোর্ট মানে অন্ডাল এয়ারপোর্ট, আপনার অবদান কি ?

পানাগর এর 6 লেন বাইপাস আপনি বানিয়েছেন ? আর কত মিথ্যে বলবেন।

হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদীর উপর মানে নামখানা তে যে ব্রিজ তৈরি হয়েছে সেটা আপনার ? NH 117 এর ওপর তৈরি হওয়া ব্রিজ তৈরির কৃতিত্ব সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের। আপনি শুধুমাত্র স্টিকার লাগিয়েছেন।

এরকম আরো আছে, আপনার নির্বাচনী মেনিফেস্টো মিথ্যাচারে পূর্ণ ছিল। আগেই বলতাম, বহুবার বলেছি। এখন আবার প্রত্যেকটা ধরে ধরে বললাম। আশা করি সবার কাজে লাগবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.