বেনিফিট অফ ডাউটস-এ খড়গপুরের গ্যাংস্টার শ্রীনু নাইডু খুনে অভিযুক্ত রাম বাবু-সহ ১৩ জনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিলেন মেদিনীপুর আদালতের চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক। রায় অপ্রত্যাশিত বলে দাবি করলেন মামলার স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর সমর কুমার লাইক। উচ্চ আদালতে নতুন করে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
দীর্ঘ ৫ বছর পর শেষ হল শ্রীনু নাইডু খুনের বিচার প্রক্রিয়া। খালাস পেলেন শ্রীনু খুনে অন্যতম অভিযুক্ত বাসব রামবাবু-সহ ১৩ অভিযুক্ত। ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি বিকেলে খড়্গপুরের নিউ সেটেলমেন্ট এলাকায় ১৮ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কার্যালয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন শ্রীনু নাইডু। দুষ্কৃতীদের হামলায় নিহত হয় শ্রীনুর ডান হাত ধর্মা রাও। যখম হন আরও ৩ জন। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই বছরই ২৮ ফেব্রুয়ারি অন্ধপ্রদেশের তানুকা থেকে গ্রেফতার করা হয় বাসব রামবাবু কে। ঘটনার ৮৭ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা পড়ে মেদিনীপুর আদালতে। খড়্গপুরে রেল মাফিয়া বাসব রামবাবু সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয় এই মামলায়। দীর্ঘদিন ধরে বিচার প্রক্রিয়া চলার পর অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে রায় দিল মেদিনীপুর আদালত।
সরকারি আইনজীবী সমর কুমার লাইক বলেন, এই মামলায় যেসব তথ্য প্রমাণ রয়েছে তাতে হাইকোর্ট বলেছে এই খুনে রামবাবুর ভূমিকা রয়েছে। তার পরেও খালাস দেওয়া হল। আমি বলব বিচারক বায়াসড হয়ে এই রায় দিয়েছেন। এনিয়ে আপিল হবেই। এসপির সঙ্গে কথা বলেছি। বিচারক শুধু বললেন বেনিফিট অব ডাউটে সবাই খালাস। সাক্ষীরা এসে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছে, অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে যাবে। অপ্রত্যাশিত রায়। যারা গুলি খেয়েছিল, যারা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তারা এসে আদালতে বলে গিয়েছে। শ্রীনু নাইডুর স্ত্রীও সাক্ষী দিয়ে গিয়েছে। তার পরও এই রায়।
রাম বাবুর ভাই এই রায় নিয়ে বলেন, এই রায়ে আমরা খুশি। ও খড়গপুরে ফিরে যাবে। যারা বলছে রাম বাবু ছাড়া পেলে খড়গপুরে ফের তানাশাহি শুরু হয়ে যাবে তাদের এনিয়ে জিজ্ঞসা করুন।
একসময়ে খড়গপুরের বেতাজ বাদশা ছিলেন শ্রীনু নাইডু। রেলের স্ক্রাপ বিক্রি করা থেকে অন্যান্য অনেক অভিযোগ ছিল শ্রীনুর বিরুদ্ধে। সেই সূত্রেই বাসব রামবাবুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় শ্রীনুর। কিন্তু সেই সম্পর্ক শেষপর্যন্ত শথ্রুতায় পরিণত হয়। একসময় গৌতম চৌবে খুনের মামলায় জেল খাটেন রামবাবু। এরপর শ্রীনু খুনের অভিযোগ ওঠে রামবাবুর বিরুদ্ধে। খুনের কয়েক দিন আগেই পুলিসে রামবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন শ্রীনু ও তার স্ত্রী। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। খুন হন রামবাবু।