হরভজনের সঙ্গে কথাই বলতে চায়নি শ্রীসন্থের মেয়ে, চড়কাণ্ডের রেশ এখনও তাঁর পরিবারে

আইপিএলের প্রথম বছরে হরভজন সিংহ চড় মেরেছিলেন শান্তাকুমারণ শ্রীসন্থকে। সেই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটে। বিতর্কিত সেই ঘটনার জন্য হরভজনের উপর ক্ষুব্ধ শ্রীসন্থের মেয়ে শ্রীসানভিকা। সম্প্রতি একটা সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় মেয়ের রাগের কথা বলেছেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন জোরে বোলার। কিছু দিন আগে একই কথা শোনা গিয়েছিল হরভজনের মুখেও।

চড়কাণ্ড প্রভাবিত করেছিল শ্রীসন্থের পরিবারকে। হরভজনের আচরণ কেউ মেনে নিতে পারেননি। সেই ঘটনার জন্য পরে একাধিক বার প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন প্রাক্তন স্পিনার। প্রাক্তন সতীর্থের সঙ্গে ভাজ্জির সম্পর্ক সহজ হয়েছে পরবর্তী সময়ে। তবে শ্রীসন্থের মেয়ের অপছন্দের তালিকাতেই রয়েছেন। শ্রীসন্থের মেয়ে হরভজনের সঙ্গে আলাপ করতেও রাজি হয়নি।

সেই ঘটনা নিয়ে শ্রীসন্থ বলেছেন, ‘‘আমি মেয়েকে বলেছিলাম, এটা ভাজ্জি ভাই। আমরা একসঙ্গে খেলেছি। শুনেই মেয়ে বলেছিল, ‘না না, আমি হাই বলব না।’ মেয়ের এমন আচরণ আমাদের একটু বিস্মিত করেছিল। ভেবেছিলাম পুরনো ঘটনাটা নিয়ে হয়তো ওর স্কুলে আলোচনা হয়েছে। ওর মনে প্রভাব ফেলেছে। আমরা মেয়েকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। তবু ও হরভজনের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি। পরে মেয়েকে ভাল করে বুঝিয়েছিলাম। ওকে বলেছিলাম, হরভজন আমাদের বড় দাদার মতো।’’

প্রাক্তন ক্রিকেটারদের একটি প্রতিযোগিতা খেলতে গিয়ে হরভজনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল শ্রীসন্থের পরিবারের। সে সময়ই তাঁর মেয়ে কথা বলতে চায়নি হরভজনের সঙ্গে। শ্রীসন্থ আরও বলেছেন, ‘‘ভাজ্জি ভাই ইচ্ছা করে মেরেছিল বলে মনে হয় না। উত্তেজনার বশে করে ফেলেছিল। ওই ঘটনাটা থেকে আমরা দু’জনেই শিক্ষা নিয়েছিলাম।’’

কিছু দিন আগে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ইউটিউব চ্যানেল ‘কুট্টি স্টোরিস উইথ অ্যাশ’-এ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন হরভজন। তখনও উঠেছিল ২০০৮ সালের আইপিএলের সেই বিতর্কিত ঘটনার কথা। হরভজনের কাছে অশ্বিন জানতে চেয়েছিলেন, জীবনের কোন ঘটনা মুছে ফেলতে চান। উত্তরে হরভজন বলেন, ‘‘পারলে একটা জিনিস জীবন থেকে মুছে ফেলতে চাইব। সেটা হল, শ্রীসন্থের সঙ্গে ঘটা সেই ঘটনা। আমার জীবন থেকে ওই ঘটনাটা মুছে ফেলতে চাই। যেটা হয়েছিল, ভুল হয়েছিল। অন্তত ২০০ বার ক্ষমা চেয়েছি। তবু এখনও ঘটনাটার কথা মনে পড়লে খারাপ লাগে। সুযোগ পেলে এখনও ক্ষমা চেয়ে নিই আমি।’’

প্রাক্তন অফ স্পিনার আরও বলেছিলেন, ‘‘ওই ঘটনার অনেক দিন পর শ্রীসন্থ এবং ওর পরিবারের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তখন শ্রীসন্থের মেয়ে আমাকে বলে, ‘তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই না। তুমি আমার বাবাকে মেরেছ।’ ওইটুকু বাচ্চার মুখে কথাটা শুনে খুব খারাপ লেগেছিল। কেঁদেই ফেলেছিলাম প্রায়। নিজেকে প্রশ্ন করেছিলাম, একটা ছোট্ট মেয়ের মনে কী ছাপ ফেললাম। এখন ওর মেয়ের কাছেই আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’ উল্লেখ্য, শ্রীসানভিকার বয়স ১০।অথচ ১৭ বছর আগের ঘটনা তাকে প্রভাবিত করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.