সিলেকশন মিটিংয়ে উপস্থিত থাকেন সৌরভ, অস্বস্তিতে পড়েন অন্যরা, দাবি প্রাক্তন নির্বাচকের

বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আবারও বিতর্কে জড়ালেন। সম্প্রতি ভারতীয় উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহাকে শ্রীলঙ্কা সিরিজে দলে না নেওয়ার পর প্রাক্তন অধিনায়ক ও বর্তমান প্রেসিডেন্টকে নিয়ে বেশ কিছু কথা বলেছিলেন ঋদ্ধি। তারমধ্যে সাহা জানিয়েছিলেন সৌরভ তাকে বলেছিল তিনি যতদিন সভাপতির পদে রয়েছেন তাকে কেউ দল থেকে সরাতে পারবে না। যদি এটা সত্যি হয় তাহলে কোন ভিত্তিতে এ কথা বলেছিলেন সৌরভ। এই সমালোচনার মাঝেই এখন কয়েকজন প্রাক্তন এবং বর্তমান নির্বাচক নিশ্চিত করেছেন যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নির্বাচন সভায় হস্তক্ষেপ করছেন।

বিসিসিআই-এর গঠনতন্ত্রে স্পষ্ট বলা আছে, জাতীয় দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে সভাপতির হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। সুপ্রিম কোর্টও এই সংবিধান অনুমোদন করেছে। এতে বলা হয়েছে, আহ্বায়ক বাছাই প্রক্রিয়ায় কোনও হস্তক্ষেপ ছাড়াই সভায় উপস্থিত থাকার অধিকার শুধু বিসিসিআই-এর সচিবের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস যখন বিসিসিআই-এর প্রাক্তন এবং বর্তমান নির্বাচকের সঙ্গে কথা বলেছেন, তখন তারা নিশ্চিত করেছেন যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ক্রমাগত দল বাছাই বৈঠকে উপস্থিত থাকেন। তারা আরও বলেছিলেন যে সৌরভ অক্টোবর ২০১৯ সালে সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি প্রতিটি সিলেকশন সভায় অংশ নিতেন।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই নির্বাচক জানান যে, অনলাইনে দল সিলেকশনের সময় সভায় সৌরভ উপস্থিত থাকেন। তার উপস্থিতি এবং তার পদ বিবেচনা করে, কেউ আপত্তি করতে পারেনি। তাদের মধ্যে একজন বলেছেন যে সৌরভ সেখানে থাকার কারণে তিনি অনেক চাপ অনুভব করেছেন। একই সঙ্গে কমিটির অনেক সদস্যও এ কারণে তাদের মতামত দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আমলে নির্বাচক কমিটি অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মধ্যে একটি হল বিরাট কোহলির নেতৃত্ব যাওয়া এবং রোহিত শর্মাকে সমস্ত ফর্ম্যাটে অধিনায়ক করা। বিসিসিআই-এর একাধিক সূত্র আরও বলেছে যে দল নির্বাচনের সভায় সৌরভের অভিজ্ঞতার কাছে নির্বাচকরা কম অভিজ্ঞ। সে কারণেই সৌরভের উপস্থিতিতে নির্বাচকদের চাপে ফেলত। তাদের অভিজ্ঞতার সামনে তার চিন্তাভাবনা রাখতে অক্ষম। এ কারণে ভারতীয় ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কমিটির গুরুত্ব কমে গিয়েছে।

এর আগেও এই বিষয়টি উঠে এসেছিল। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরদিন ২৪ অক্টোবর ২০১৯-এ বোর্ড প্রথম একটি ছবি টুইট করেছিল। এই ছবির ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘সিনিয়র সিলেকশন কমিটি আজ বিকেলে মিটিং করেছে এবং বাংলাদেশ সিরিজের জন্য টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট দল বেছে নিয়েছে।’ এই ছবির মাঝখানে বসে থাকতে দেখা গেছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। তারা ছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচক এমএসকে প্রসাদ, সচিব জয় শাহ, অধিনায়ক বিরাট কোহলি, সহ-অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং অন্যান্য নির্বাচকরা। সম্প্রতি, এই নিয়ে বিতর্ক উঠলে সৌরভ বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মহারাজ বলেছিলেন, ‘আমি স্পষ্ট করতে চাই যে ছবিটি নির্বাচনী বৈঠকের নয়।’ এখন যদি আমরা সাম্প্রতিক অভিযোগের কথা বলি, এর পরে আবারও বিসিসিআই সভাপতির সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচকদের সাথে কথোপকথনের প্রশ্নাবলী যখন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে পাঠাযন হয় তখন দাদা এর কোনও উত্তর দেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.