২০২২ সালের গোড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার (India Tour Of South Africa) বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হারতেই অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। বেশ বোঝা গিয়েছিল, প্রোটিয়াসদের বিরুদ্ধে সেই সিরিজ হারের জ্বালা মিটাতেই টিম ইন্ডিয়ার (Team India) প্রাক্তন অধিনায়ক এমন চমকে দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বিরাট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার সময় বিসিসিআই (BCCI) দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল। এমনটাই জানালেন বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)।
গতবারের মতো এবারও বিশ্ব টেস্ট ফাইনাল (ICC World Test Championship Final 2023) হেরে গেল ভারত। অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিরুদ্ধে এবার ২০৯ রানে হেরে গেল ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেড। স্বভাবতই রোহিত শর্মাকে (Rohit Sharma) অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। অনেকের দাবি ফের বিরাটের হাতে টেস্ট দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হোক। এমন প্রেক্ষাপটে লাল বলের ক্রিকেট থেকে বিরাটের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে মুখ খুললেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক।
সৌরভ বলেন, “বিরাট টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার সময় বিসিসিআই অবাক হয়ে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর বিরাট এমন একটা সিদ্ধান্ত নেবে কেউ ভাবতেই পারে। কিন্তু কেন বিরাট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছিল, সেটা ও নিজেই বলতে পারবে। তবে এরপর যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে রোহিতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।” যদিও ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অধিনায়ক বিরাট আলাদা পরিচয় আদায় করে নিয়েছিলেন। ৬৮টি ম্যাচে তাঁর নেতৃত্বে ভারত জিতেছিল ৪০টি ম্যাচ। হার ১৭টি ম্যাচে। ১১টি ম্যাচ ড্র হয়েছিল।
তবে বিরাট টেস্ট দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার আগে থেকেই সৌরভের সঙ্গে তাঁর দুরত্ব বেড়ে গিয়েছিল। ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা উড়ে যাওয়ার আগে ১৫ ডিসেম্বর সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন বিরাট। সেখানে তিনি প্রাক্তন বোর্ড সভাপতি সৌরভের নাম মুখে না এনেও, তাঁর দিকে মারাত্মক অভিযোগ করেছিলেন। বলেছিলেন, “ওয়ানডে দলে নির্বাচনের জন্য আমি ফাঁকা আছি। অতীতে কিছু কথা হয়েছে যে, আমি নাকি কোনও ইভেন্টে যোগ দিচ্ছি বা এরকম কিছু। কিন্তু এর কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। কয়েকজন মিথ্যা কথা লিখেছে। আমি দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছিলাম এবং এখনও আছি। আমার বিসিসিআই-এর সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। আমি কোনও বিরতির কথাও বলিওনি। লোকজন মিথ্যা কথা লিখছে। আমি কখনও বিশ্রাম চাইনি।”
যদিও ক্রিকেটমহলের একাংশ দাবি করেছিল যে, পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটের নেতৃত্ব থেকে ছেঁটে ফেলার জন্যই নাকি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোহলি। যা বোর্ডের উপর আরও চাপ বাড়িয়েছে। এদিন কোহলি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “গত ৮ ডিসেম্বর টেস্ট দলের নির্বাচনী বৈঠকের দেড় ঘণ্টা আগে আমার সঙ্গে মুখ্য নির্বাচক চেতন শর্মা কথা বলেছিল। টেস্ট দল নিয়ে যাবতীয় আলোচনার পর তিনি জানানো হয় যে, যেহেতু আমি টি-টোয়েন্টি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছি না, তাই পাঁচ জন নির্বাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, আমি আর ওয়ানডে দলের ক্যাপ্টেন রাখা সম্ভব নয়। বিসিসিআই-এর কর্মকর্তা ও মুখ্য নির্বাচক মণ্ডলীর সেই সিদ্ধান্তকে আমি মেনে নিয়েছি। এরপর থেকে বিসিসিআই-এর কোনও কর্তার সঙ্গে আমার কথা হয়নি। টেলিফোনের সেই আলাপে অধিনায়কত্ব বদলের ব্যাপারে যা বলার বলা হয়েছিল।” এত মাস পরে সেই ইস্যু ফের একবার সামনে চলে এল। এবার এই মহা বিতর্কের জল কতদূর গড়ায় সেটাই দেখার।