তৃণমূলের তোলাবাজির জন্যই বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের দূষণ রোধ করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করলেন বিষ্ণুপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। আজ বড়জোড়া বিধানসভার গোদারডিহি অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে প্রচার করার সময় বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের দূষণ নিয়ে মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়েন বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। তাকে অনেকেই প্রশ্ন করেন ৩ বছর বিধায়ক থাকার পর ১০ বছরের সাংসদ ফের নির্বাচনের প্রার্থী। শিল্পাঞ্চলের দূষণ নিয়ে তিনি কি করেছেন? এর জবাবে সৌমিত্র খাঁ মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এর জন্য দায়ী করে চাঁছাছোলা ভাষায় জবাব দেন। আর এ নিয়ে দুই প্রাক্তনী তথা তার প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মন্ডলের সঙ্গে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়ে যায়।
সৌমিত্র খাঁ বলেন, মানতে হবে বামফ্রন্ট আমলে বড়জোড়ায় শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠে। সেই সময় অসংখ্য ছোটো ও মাঝারি কারখানা গড়ে ওঠে। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর পিসি ভাইপো মিলে বড়জোড়ার শিল্প তালুকে তোলাবাজি শুরু করেছেন। ফলে কারখানা মালিকরা দূষণ রোধের যন্ত্র ইএসপি মেশিন চালু না রেখে কোটি কোটি টাকার বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় করছে। এনিয়ে আমরা বহুবার ট্রাইবুনালে অভিযোগ করেছি। আমাদের অভিযোগ ক্রমে সংশ্লিষ্ট দফতর বহু কারখানায় জরিমানা করেছে। কিন্তু তৃণমূলীদের জন্য দূষণ থেকে মানুষ রেহাই পাচ্ছে না। সৌমিত্র খাঁর দাবি, বিজেপি শিল্পাঞ্চলে শিল্পতিদের আহ্বান জানাচ্ছে কারখানা বন্ধ করতে নয়। শুনেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন সুজাতা মন্ডল। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় বড়জোড়ায় ৩৬ টা কারখানা হয়েছে। ঝাঁ চকচকে রাস্তা হয়েছে। সৌমিত্রকে ফের পাগল ছাগল বলে অশালীন মন্তব্য করে সুজাতা বলেন, বড়জোড়ার যানজট আটকাতে উড়ালপুল, বেলিয়াতোড়-দুর্গাপুর রেলপথ নিয়ে লোকসভায় কখনো কোনো প্রশ্ন রেখেছেন।
সৌমিত্র খাঁ বলেন, এবার বুঝুন উন্মাদ কে? বাম আমলে বড়জোড়ায় ৬২ টা কারখানা হয়েছিল। গত ১৩ বছর বন্ধ হতে হতে এখন ৩৬ টা কোনো রকমে টিকে আছে। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দা হয়েও এখানকার যুবকদের ভিন রাজ্যে পরিযায়ী হয় কেন? তিনি বলেন, গত ১০ বছরে তিনি ৯ টি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রূপায়ণ করেছেন। কিন্তু তার স্বপ্নের প্রকল্প বেলিয়াতোড়- দুর্গাপুর রেলপথ এবং বড়জোড়ার উড়ালপুলের দাবি নিয়ে লোকসভায় সোচ্চার হয়েছি। কিন্তু রাজ্য সড়ক ও রেলপথের জন্য জমি দিদিমনির। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ও ভূতল মন্ত্রক বলেছিলেন রাজ্য সরকারের অনুমতি নিয়ে কথা বলতে।
সৌমিত্রবাবুর দাবি, বড়জোড়ার তৃনমূল বিধায়ক অলক মুখার্জীকে বিষয়টি বলি। কিন্তু প্রকাশ্য প্রশাসনিক সভায় দিদিমনি অলকদাকে বলেছিলেন, এ নিয়ে ভাবতে হবে না। সুজাতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষ্ণুপুরের মানুষ ওনাকে দিল্লি তো অনেক দূর বিষ্ণুপুরেই ঢুকতে দেবেন না। এ কথার জবাবে সৌমিত্র সম্পর্কে তীর্যক মন্তব্য করে বলেন, এবার উনি ঠিক করুন বিষ্ণুপুরে প্রাক্তন হয়ে উনি কি পেশা অবলম্বন করবেন।