কেউ ভারতের টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য। কেউ আবার টেস্ট খেললেও ধারাবাহিক ভাবে সুযোগ পান না। আবার কেউ অনেক চেষ্টা করেও দরজা খুলতে পারছেন না। তাঁরা প্রত্যেকেই পাখির চোখ করেছেন দলীপ ট্রফিকে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা।
দলীপ ট্রফির পর শুরু হবে ভারতের ঘরোয়া মরসুম। সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ় ও তার পরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ় রয়েছে ভারতের। সেই দুই সিরিজ়ে দলে ঢোকার লক্ষ্য দলীপে পরীক্ষায় বসবেন ভারতের ১৭ ক্রিকেটার। তাঁদের মধ্যে আট জন ব্যাটার, এক জন উইকেটরক্ষক, এক জন অলরাউন্ডার, এক জন স্পিনার ও ছ’জন পেসার।
শ্রেয়স আয়ার (পশ্চিমাঞ্চল)— এশিয়া কাপের দলে জায়গা পাননি। ভারতের টেস্ট দলেও দীর্ঘ দিন খেলেননি। অথচ ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত রান করেছেন। ভারতের মিডল অর্ডারে সাই সুদর্শন ও করুণ নায়ার নিজেদের জায়গা পাকা করতে পারেননি। ফলে দু’টি জায়গা ফাঁকা আছে। সে দিকে নজর রয়েছে শ্রেয়সের। তাই দলীপ ট্রফি কাজে লাগাতে চাইবেন তিনি।
সরফরাজ় খান (পশ্চিমাঞ্চল)— হঠাৎ করেই ভারতের টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েছেন তিনি। গত কয়েক মাসে ওজন কমিয়ে সরফরাজ় এখন ফিট। বুচিবাবুতে রান করেছেন। দলীপেও রান করতে চাইবেন তিনি। শ্রেয়সের মতো তাঁরও নজরে ভারতের মিডল অর্ডার।
রুতুরাজ গায়কোয়াড় (পশ্চিমাঞ্চল)— সাদা বলের ক্রিকেটে জাতীয় দলের হয়ে খেললেও লাল বলের ক্রিকেটে অভিষেক হয়নি। গত রঞ্জি থেকে মিডল অর্ডারে খেলা শুরু করেছেন রুতুরাজ। তিনিও নিজেকে লড়াইয়ে রাখতে চান।
অভিমন্যু ঈশ্বরণ (পূর্বাঞ্চল)— গত কয়েকটি সিরিজ়ে ভারতীয় দলে খেললেও প্রথম একাদশে জায়গা পাচ্ছেনা না বাংলার এই ক্রিকেটার। প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর ইঙ্গিত দিয়েছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সিরিজ়ে অভিষেক হতে পারে তাঁর। দলীপে ভাল খেলে সেই সম্ভাবনা নিশ্চিত করতে চাইছেন তিনি।
দেবদত্ত পড়িক্কল (দক্ষিণাঞ্চল)— তিনিও টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েছেন। কিন্তু বিরাট কোহলির অবসরের পর মিডল অর্ডারে জায়গা ফাঁকা হয়েছে। তাই দলীপের দিকে তাকিয়ে পড়িক্কল।
রজত পাটীদার (মধ্যাঞ্চল)— লাল বলের ক্রিকেটে পাটীদারের কেরিয়ার বড় নয়। আইপিএলে সাফল্য পেয়েছেন। এ বার টেস্ট দলেও ঢোকার চেষ্টা করবেন তিনি।
তিলক বর্মা (পশ্চিমাঞ্চল)— ভারতের অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটার তিলককে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটার হিসাবে দেখেন। এখন অবশ্য ছোট ফরম্যাটে তাঁর জায়গা পাকা। এ বার লাল বলের ক্রিকেটেও নিজের জায়গা করার জন্য দলীপের দিকে নজর এই বাঁহাতি ব্যাটারের।
যশস্বী জয়সওয়াল (পশ্চিমাঞ্চল)— ভারতের টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য। ভাল ফর্মেও রয়েছেন। বাকিরা যেখানে দলে ঢোকার চেষ্টা করবেন, সেখানে যশস্বীর লড়াই জায়গা ধরে রাখার। ভারতীয় দলে প্রতিযোগিতা কম নেই। একটু খারাপ খেললেই বাদ পড়তে হতে পারে। সেটা চাইবেন না যশস্বী।
ধ্রুব জুরেল (মধ্যাঞ্চল)— তিনি এখন ভারতের টেস্ট দলের দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক। কিন্তু লড়াই কম নেই। তাই জুরেলকে জায়গা পাকা করতে হলে রানও করতে হবে। সেটা মাথায় রয়েছে তাঁর। দলীপে সেই কাজটাই করতে চাইবেন তিনি।
শার্দূল ঠাকুর (পশ্চিমাঞ্চল)— ইংল্যান্ড সিরিজ়ে দু’টি টেস্ট খেলেছেন। বিশেষ নজর কাড়তে পারেননি। ফলে জায়গা হারাতে হয়েছে। ভারতে এখন পেসার অলরাউন্ডারের অভাব রয়েছে। সেই সুযোগ নিতে চাইবেন শার্দূল। তাই দলীপে ভাল খেলার চেষ্টা করবেন তিনি।
কুলদীপ যাদব (মধ্যাঞ্চল)— দেশের একমাত্র চায়নাম্যান বোলার হয়েও প্রথম একাদশের বাইরেই বেশির ভাগ সময় কাটাতে হয় কুলদীপকে। সামনে দেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ়। সেখানে খেলার সুযোগ রয়েছে তাঁর। তবে তার জন্য বলের পাশাপাশি ব্যাটটাও ভাল করতে হবে তাঁকে।
অংশুল কম্বোজ (উত্তরাঞ্চল)— ইংল্যান্ডে অভিষেক হলেও খুব একটা নজর কাড়তে পারেননি। তবে বোঝা গিয়েছে, কোচ গম্ভীরের নজরে রয়েছেন তিনি। দলীপ ভাল খেলে সেই জায়গা পাকা করতে চাইবেন তিনি।
হর্ষিত রানা (উত্তরাঞ্চল)— হর্ষিতও গম্ভীরের পছন্দের বোলার। কিন্তু তিনিও টেস্ট দলে জায়গা হারিয়েছেন। দলীপে ভাল খেলতে চাইবেন আইপিএলে কেকেআরে খেলা পেসার।
অর্শদীপ সিংহ (উত্তরাঞ্চল)— ইংল্যান্ডে পাঁচ টেস্টেই বাইরে বসতে হয়েছে। দেশের মাটিতে টেস্ট দলে সুযোগ পাবেন কি না জানেন না। সেই কারণে দলীপে ভাল করতে চাইবেন অর্শদীপ।
খলিল আহমেদ (মধ্যাঞ্চল)— ভারতের আর এক বাঁহাতি পেসার। সম্প্রতি কাউন্টিতে ভাল বল করেছেন। দলীপেও সেই কাজটা করতে চাইবেন খলিল। দলে ঢোকার প্রতিযোগিতায় রয়েছে তিনিও।
মহম্মদ শামি (পূর্বাঞ্চল)— ভারতীয় টেস্ট দলে নিয়মিত এই পেসার জায়গা হারিয়েছেন। চোট সারিয়ে ফিরে ছন্দ ফিরে পাননি এখনও। তবে দেশের মাটিতে টেস্টে সুযোগ পেতে পারেন তিনি। তার জন্য দলীপে ভাল বল করতে হবে শামিকে।
মুকেশ কুমার (পূর্বাঞ্চল)— শামির মতো মুকেশও ভারতের টেস্ট দলে জায়গা হারিয়েছেন। কিন্তু এখনও সুযোগ শেষ হয়নি। তাই দলীপে ভাল খেলার লক্ষ্যে নামবেন বাংলার এই পেসার।

