শনিবার রাতে বিরাটিতে নির্মীয়মান বাড়ির অংশ ভেঙে মাথায় পড়ে মৃত্যু হয় এক মহিলার। সেই ঘটনায় বিল্ডিংয়ের প্রোমোটার-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার সকালে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ ওই নির্মীয়মান বাড়ির তিন প্রোমোটার, লেবার ইনচার্জ-সহ মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করে। মৃতার স্বামী প্রোমোটার-সহ চার জনের বিরুদ্ধে এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার পরেই গ্রেফতার।
শনিবার রাতে উত্তর দমদম পুরসভার বিরাটিতে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি পাঁচ তলা বাড়ির অংশ ভেঙে পড়ে। ওই সময় বাড়ির নীচে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলেন কেয়া শর্মা চৌধুরী। তিনি পাশের বাড়িতে থাকতেন। নির্মীয়মাণ বাড়ির ইট মাথায় পড়ে মৃত্যু হয় ওই মহিলার। এর পর এয়ারপোর্ট থানায় বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার স্বামী সুদীপ শর্মা চৌধুরী। তাঁর অভিযোগপত্রে প্রোমোটার গৌতম দে, তাঁর সহযোগী সজু সেন, তপনভা ঘোষ এবং বহুতলের নির্মাতা অজয় রায়ের নাম ছিল। সেই ঘটনায় রবিবার সকালে গ্রেফতার হলেন প্রোমোটার-সহ মোট ছ’জন।
মৃতার স্বামী সুদীপের দাবি, পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই পাঁচ তলা বহুতলটি তৈরি হচ্ছিল। তার সামনের রাস্তা মাত্র ৮ ফুটের। গত রাতে নির্মীয়মাণ বাড়ির অংশ সরাসরি মহিলার মাথার উপর পড়ে। ওই সময়ে তিনি নিজের বাড়ির অংশে দাঁড়িয়েই ফোনে কথা বলছিলেন বলে অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন মহিলার স্বামী।
এ প্রসঙ্গে রবিবার সকালে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘‘আমি এত দিন ভাবতাম, উপর মহল থেকে নির্দেশ দিলেই কাজ হয়ে যায়। কিন্তু আদতে যে তা হয় না, সেটা দেখতে পাচ্ছি। আমার দুর্ভাগ্য যে এত চেষ্টা সত্ত্বেও দুর্ঘটনা আটকাতে পারছি না। আমি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে ইতিমধ্যে কথা বলেছি। আগামী দিনে এমন নিয়ম করব, যাতে বেআইনি নির্মাণ করতে গেলে প্রোমোটারের পা কাঁপে। এখন নির্বাচনী আচরণবিধি চলছে বলে আমি এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারছি না।’’
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহুয়া শীল ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তবে গার্ডেনরিচের ঘটনার সঙ্গে এর তুলনা করলে ভুল হবে। আমার এই পুরসভা এলাকায় কোনও বেআইনি নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয় না। নিজেদের লাভের কথা ভেবে আমরা কিছু করি না।’’