দোতলার ঘরে ছিলেন ছেলে-বৌমা। মা ছিলেন এক তলায়। আচমকাই উপর তলা থেকে অদ্ভুত শব্দ শুনতে পান তিনি। দেখতে বলেন ছোট ছেলেকে। ছোট ছেলে গিয়ে দরজায় ধাক্কা দেন। ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনও সাড়াশব্দ নেই। সন্দেহ হতেই দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখেন, দাদার বুকের উপর বসে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করে ফেলেছেন বৌদি!
মুর্শিদাবাদের সালার থানা এলাকার ঘটনা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম চন্দন শেখ (৩৫)। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত খাদিজা খাতুনকে। বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর দুয়েক আগে কাগ্রামের চন্দনের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের তালিবপুরের খাদিজার বিয়ে হয়। চন্দন পেশায় দরজি। দীর্ঘ দিন মহারাষ্ট্রে পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করেন। কয়েক দিন আগেই বাড়িতে ফিরেছিলেন। চন্দনের অনুপস্থিতিতে খাদিজার সঙ্গে প্রতিবেশী এক যুবকের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়। স্বামী বাড়ি ফিরে আসায় সেই সম্পর্কে ছেদ প়ড়ে। অভিযোগ, প্রেমিকের সঙ্গে শলাপরামর্শ করেই স্বামীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন খাদিজা। স্বামীকে খুন করার মুহূর্তে দেওর সুরজ শেখ ঘরে ঢুকে পড়তেই খাদিজা সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে ওই পরিবারের দাবি। এর পর সুরজই চিৎকার চেঁচামেচি করে লোক জড়ো করেন। গ্রামের কিছু মহিলা পিছু নিয়ে ধরেন খাদিজাকে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ। সুরজ বলেন, ‘‘উপরের ঘরে অস্বাভাবিক শব্দ শুনতে পেয়ে মা দেখতে বলেছি। এক তলা থেকে ডেকে উত্তর না পেয়ে উপরে যাই। কোনও সাড়া না পাওয়ায় দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকি। দেখতে পাই, বৌদি দাদার বুকের উপর বসে আছে। দাদার গলায় গামছা দিয়ে জড়িয়ে দু’দিক থেকে টেনে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করছে। আমি চিৎকার করলে ছুটে পালিয়ে যায়।’’ মৃত যুবকের মা হাসনা বিবি দাবি করেন, ‘‘বৌমার সঙ্গে পাড়ার একটি ছেলের সম্পর্ক ছিল। ছেলে এসে যাওয়ায় ওদের সমস্যা হচ্ছিল। তাই ওকে খুন করেছে। আমি ওই মেয়ের ফাঁসি চাই।’’
তদন্তকারীদের কাছে খাদিজা অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘দুপুরবেলা ভাত খেয়ে শুয়েছিল চন্দন। আচমকা ছটফট করতে করতে মারা যায়। পুলিশ তদন্ত করলে সবটা পরিষ্কার হবে।’’