ওমিক্রনের আশঙ্কাকে সামনে রেখে বুধবার থেকে সিকিমে বিদেশি পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধে নির্দেশ জারি হল। রাজ্যের কোথাও বিদেশিদের কোনও পারমিট দেওয়া হবে না বলেও সিকিম সরকার জানিয়েছে। মঙ্গলবার সিকিমের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে ওই নির্দেশ জারি হয়েছে। সিকিম সরকারের এক সচিবের কথায়, বিশ্বের ১২টি দেশে ওমিক্রনের হদিশ মিলেছে। এ দেশেও সতর্কতার কথা বলা হচ্ছে। সিকিমে প্রচুর বিদেশি পর্যটক আসেন। তাই আগাম সতর্কতা হিসেবে নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হল।
সরকারি সূত্রের খবর, ২০২০ সালে ৫ মার্চ করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক ধাপেই বিদেশিদের জন্য দরজা বন্ধ করেছিল সিকিম। সেই সময় কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করে তা না করায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয় সিকিমকে। কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের তরফে কড়া চিঠি দেওয়া হয় সিকিমকে। ওই বছরের ১৭ মার্চের পর থেকে পুরোপুরি ভাবে সিকিমে দেশি-বিদেশি পর্যটকের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করার নির্দেশ জারি করা হয়। আবার বিদেশিদের জন্য বন্ধ হল সিকিমে।
দেশের পর্যটক তো বটেই, বিদেশিদের কাছেও সিকিম বরাবর জনপ্রিয়। বছরের প্রতিটি মরসুমে পর্যটকে ঠাসা থাকে সিকিম। গত ২০১৯ সালে বাংলাদেশিদের জন্যও সিকিম দরজা খুলে গিয়েছিল। তাতে পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়ছিল। সে বার গরমের মরসুমে ভিড় উপচে পড়ার মতো বুকিং হয়েছিল সিকিমে। কিন্তু করোনার সংক্রমণ সব বদলে দেয়। সিকিমে ঢোকার চেকপয়েন্টগুলি আগাম বন্ধ করে দিয়ে সন্দেহভাজনদের আইসোলেশনে রেখে, কোয়রান্টিন করে পরীক্ষা হয়। সিকিম জুড়ে ক়ড়া লক়ডাউন চলে।
বিভিন্ন এলাকা নতুন করে স্যানিটাইজ়েশনের কাজ চলে। করোনা-সহ বিভি্ন্ন জীবাণু সংক্রমণের ল্যাবরেটরি তৈরিও হয়েছে। তবে চলতি বছরের প্রথম দিকের পর সংক্রমণের শতাংশের হার সিকিমে বাড়তেই থাকে। এ রাজ্য ৫-৬ শতাংশের সংক্রমণ সময় সিকিম তিনগুণ সংক্রমণের শতাংশে পৌঁছে যায়। তাই বরাবর পর্যটন, পরিযায়ী শ্রমিক এবং কর্মসূত্রে সিকিমে থাকাদের নিয়ে চিন্তাভাবনা করে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে সিকিমের পর্যটন ব্যবসায় বহু বাঙালি-সহ বাইরের রাজ্যের লোকেদের বিনিয়োগ থাকে। এবার দেশীদের জন্য খোলা থাকায় তাঁরা ভালই ব্যবসা পুজোর সময় থেকে করছেন।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, করোনা নিয়ে সচেতন থেকেই আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। বিদেশিদের আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঠিকই রয়েছে। দেশি পর্যটকেরা যাতে নিয়ম মেনে সিকিম ঘুরতে পারেন, নজর রাখতে হবে।