গ্রেপ্তার করতে হবে শেখ শাহজাহানকে! বিজেপির থানা ঘেরাও অভিযানে বাধা, অবস্থান বিক্ষোভ সুকান্তর, সরগরম ন্যাজাট

 বিপুল উত্তেজনা ছড়ালো বিজেপির ন্যাজাট থানা ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার‌ এই অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল।‌ বিজেপি মিছিল করে থানার দিকে এগোলে তাদের মাঝপথেই আটকে দেওয়া হয়। ব্যারিকেট করে বাধা দেওয়া হয় তাদের। এর পরই বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় পুলিশের। গার্ডরেল ফেলে দেওয়া হয়। ফলে বাধা পেয়ে রাস্তায় অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন সুকান্ত মজুমদার সহ বিজেপি নেতা কর্মীরা।

থানার বেশ কিছুটা আগে ন্যাজাট বিডিও অফিসের মোড়ে ন্যাজাট বটতলায় পুলিশ ব্যারিকেট করে রেখেছিল। সুকান্ত মজুমদারদের মিছিল সেখানে পৌঁছতেই সেই মিছিল আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই শুরু হয় অশান্তি। বচসা বাধে পুলিশের সঙ্গে। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। পুলিশের যুক্তি ছিল ১৪৪ ধারা জারি থাকার কারণেই মিছিল আটকেছেন তারা।

কিন্তু পাল্টা সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন, এতদিন পর হঠাৎ কেন ১৪৪ ধারা জারি করা হলো? পুলিশকে সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন করেন, “এক কিলোমিটার আগে থেকে ১৪৪ ধারা আছে মেনে নিলাম। তাহলে কুড়ি কিলোমিটার আগে ব্যারিকেট কেন?” পুলিশের দাবি, তারা নাকা চেকিংয়ের জন্য এই সব করেছেন। কিন্তু সুকান্ত মজুমদার তা মানতে চাননি। তিনি বলেন, বিজেপি কর্মীদের ইচ্ছে করে আটকে দেওয়া হয়েছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ১৪৪ ধারার নোটিশে কোনো কেস নম্বর নেই। কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। এলাকায় স্কুল, কলেজ সব খোলা রয়েছে, অথচ ১৪৪ ধারা। তিনি বলেন, সুকান্ত মজুমদার এলে নাকি শান্তি বিঘ্নিত হবে, ওদিকে সবুজ দ্বীপের রাজা শেখ শাহাজাহান ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

সুকান্তবাবুর অভিযোগ, মহিলা পুলিশ কর্মীদের এগিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে পুরুষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যায়। অন্যদিকে এক মহিলা বিজেপি কর্মী দাবি করেন, তাকে গায়ে আঁচড় দিয়েছে পুলিশ। তার শাড়ি ধরে টানাটানি করেছে। সুকান্ত মজুমদার তাকে পরামর্শ দেন, পুলিশের বিরুদ্ধে
শ্লীলতাহানির মামলা করুন।

সুকান্ত মজুমদারের দাবি, শেখ শাজাহান কোথায় রয়েছে পুলিশ জানে। চাইলেই গ্রেফতার করতে পারে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এখন এখানে যত পুলিশ রয়েছে, যেদিন হামলা হয়েছে পৌঁছাতে পারত না? ”

সুকান্ত মজুমদার বলেন, শেখ শাহাজাহানকে পুলিশই লুকিয়ে রেখেছে‌, বিজেপি এলে ওকে গর্তে ঢুকিয়ে দেবে। ইডি যে বাড়ির তালা ভাঙ্গতে পারেনি সে বাড়িতে বিজেপির বুলডোজার চলবে। তাঁর কথায়, “শেখ শাহজাহান আদিবাসীদের জমি দখল করে ভেরি বানিয়েছে, আর রোহিঙ্গাদের এনে এখানে বসাচ্ছে। তাদের রেশন কার্ড করে দিচ্ছে। শ্যামাপ্রসাদের মাটি এখন রোহিঙ্গাদের মাটি হয়ে গিয়েছে।”

এরপর বিজেপির পাঁচজনের প্রতিনিধি দল কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে থানায় যায়। তাদের বক্তব্য মাত্র একজন সাব-ইন্সপেক্টর ওসি ডেপুটেশন নিলেন, এটা দুঃখজনক।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে যান ইডি আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। সেখানে শাহজাহানের কয়েকশো গ্রামবাসী তথা অনুগামী তাদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। হামলায় একাধিক ইডি আধিকারিকের মাথা ফাটে। প্রাণ বাঁচাতে এলাকা ছাড়েন ইডি আধিকারিকরা। আহত ইডি আধিকারিকদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এক সপ্তাহ হতে চললো অথচ এখনও গ্রেপ্তার হয়নি শেখ শাহজাহান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.