স্বামীর পড়াশোনার খরচ জোগাতে লোকের বাড়িতে বাসন মাজতেও দ্বিধা করেননি স্ত্রী। সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতিতে যা যা দরকার সবই জুগিয়েছেন। কিন্তু পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি পাওয়ার পর আর সেই স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে চাইলেন না স্বামী। সরকারি ট্যাক্স অফিসার জানিয়ে দেন, নিজের জন্য তিনি অন্য সঙ্গী বেছে নিয়েছেন।
মধ্যপ্রদেশের এই ঘটনাটি প্রকাশ করেছে এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা। তারা জানিয়েছে, ওই সরকারি ট্যাক্স অফিসারের নাম কামরু হাথিলে। তাঁর স্ত্রীর নাম মমতা। মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা কামরু এবং মমতা ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন ২০১৫ সালে। সেই সময় কামরু ছিলেন বেকার যুবক। স্নাতক হলেও চাকরি জোটেনি। মমতাই কামরুকে বলেছিলেন সরকারি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে। কথা দিয়েছিলেন, যাবতীয় খরচ তিনি জোগাবেন।
প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশিক্ষণের খরচ নেহাত কম নয়। মমতা সেই খরচ চালানোর জন্য গৃহপরিচারিকার কাজ করতেও দ্বিধা করেননি। মমতা জানিয়েছেন, তিনি বাড়ি বাড়ি বাসন মাজা, ঘর মোছার কাজ করেছেন। কামরু যাতে তাঁর প্রয়োজনীয় বই হাতে পেতে পারেন, সে জন্য বাড়তি সময়ে বইয়ের দোকানেও কাজ করেছেন তিনি। অবশেষে ২০১৯-২০ সালের কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার হওয়ার পরীক্ষায় সফল হয়েছেন তিনি। সরকারি চাকরি নিয়ে গিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের রতলামে। তার পরেই মমতা সম্পর্ক ভাঙার আঁচ পান।
ওই সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, এর পর কামরু মমতাকে তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য করেন। অন্য এক মহিলার সঙ্গে থাকতে শুরু করেন নিজের বাড়িতে। মমতাকে তিনি জানিয়ে দেন, আর তাঁর সঙ্গে থাকতে চান না। ২০২১ সালে এই ঘটনার পর মমতা মামলা করেছিলেন কামরুর বিরুদ্ধে। কামরু সেই সময় আদালতে মেনে নেন, মমতা তাঁর স্ত্রী। তাঁকে মাসে ১২ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন কামরু। সম্প্রতি মমতা অভিযোগ করেছেন, কামরু তাঁর প্রতিশ্রুতি পালন করেননি। সেই মর্মেই মমতা আবার মামলা করেছেন তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত, মমতার দ্বিতীয় বিয়ে এটি। প্রথম স্বামী বিয়ের আড়াই বছর পরই মারা যান। তত দিনে মমতার একটি পুত্রসন্তান হয়েছে। সম্প্রতি সেই সন্তানেরও মৃত্যু হয়েছে। মাস কয়েক আগে মারা যায় মমতার ১৫ বছরের ছেলে।