ব্যাট হাতে শাকিব আল হাসান ফর্মে ফিরতেই বড় রান করল বাংলাদেশ। পরে বল হাতে নজর কাড়লেন দলের তরুণ স্পিনার রিশাদ হোসেন। সেন্ট ভিনসেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ২৫ রানে হারাল বাংলাদেশ। এই জয়ের ফলে বিশ্বকাপের সুপার ৮-এর পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন নাজমুল হাসান শান্তরা। গ্রুপের শেষ ম্যাচে নেপালকে হারাতে পারলেই সুপার ৮ পাকা হয়ে যাবে তাঁদের।
টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। বাংলাদেশের শুরুটা ভাল হয়নি। অধিনায়ক শান্ত দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে যান। আরিয়ান দত্তের বলে ১ রানে ফেরেন তিনি। লিটন দাস আরও এক বার ব্যর্থ। ১ রানের মাথায় দুর্দান্ত ক্যাচে তাঁকে ফেরত পাঠান সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখ্ট। সম্ভবত চলতি বিশ্বকাপের সেরা ক্যাচ ধরলেন নেদারল্যান্ডসের এই ক্রিকেটার। লিটনের উইকেটও নেন আরিয়ান।
দুই উইকেট পড়ার পরে জুটি বাঁধেন তানজিদ হাসান ও শাকিব। তানজিদ শুরু থেকেই ভাল খেলছিলেন। অফ সাইডে বেশ কয়েকটি চার মারেন তিনি। শাকিবও ধীরে ধীরে হাত খোলা শুরু করেন। পাওয়ার প্লে-কাজে লাগান তাঁরা। প্রথম ছ’ওভারে ৫৪ রান করে বাংলাদেশ।
নেদারল্যান্ডসকে খেলায় ফেরান ভ্যান মিকেরেন। ৩৫ রানের মাথায় তানজিদকে ফেরান তিনি। আগের দুই ম্যাচে রান করা তৌহিদ হৃদয় এই ম্যাচে রান করতে পারেননি। মাঝের ওভারে বাংলাদেশকে টানলেন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শাকিব ও মাহমুদুল্লা। অনেক দিন পরে শাকিবের ব্যাটে রান এল। উইকেটে দু’দিকেই বড় শট খেললেন তিনি। শাকিবকে কিছুটা সুবিধা করে দিলেন নেদারল্যান্ডসের বোলারেরা। শর্ট বলে তাঁর দুর্বলতার কথা সবাই জানেন। এই ম্যাচে শাকিবকে তেমন শর্ট বল করাই হল না।
নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন শাকিব। মাহমুদুল্লা ২৫ রান করে আউট হন। শেষ দিকে সাত বলে ১৪ রান করেন জাকের আলি। ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করে বাংলাদেশ। ৬৪ রান করে অপরাজিত থাকেন শাকিব।
১৬০ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা সাবধানে করেন মাইকেল লেভিট ও ম্যাক্স ও’ডয়েড। উইকেট না পড়লেও রানের গতি কম ছিল। নেদারল্যান্ডসকে প্রথম ধাক্কা দেন তাসকিন আহমেদ। ১৮ রানে লেভিটকে আউট করেন তিনি। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে ও’ডয়েডকে ১২ রানে ফেরান তানজিম হাসান।
তৃতীয় উইকেটে বিক্রমজিৎ সিংহ ও এঙ্গেলব্রেখ্ট ভাল জুটি বাঁধেন। বাঁহাতি বিক্রমজিৎ তিনটি ছক্কা মারেন। দেখে মনে হচ্ছিল, খেলা বার করে নেবেন তাঁরা। তখনই বুদ্ধি কাজে লাগান শান্ত। ডানহাতি অফ স্পিনার মাহমুদুল্লাকে বল দেন তিনি। ক্রিজ় ছেড়ে বেরিয়ে তাঁকে মারতে গিয়ে ২৬ রানে ফেরেন বিক্রমজিৎ।
চতুর্থ উইকেটে এঙ্গেলব্রেখ্ট ও অধিনায়ক এডওয়ার্ডস ভাল খেলছিলেন। দলকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন তাঁরা। তখনই কামাল করলেন লেগ স্পিনার রিশাদ। চার বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট নিলেন তিনি। ফেরালেন এঙ্গেলব্রেখ্ট (৩৩), বাস ডি’লিড (০) ও লোগান ভ্যান বিককে (২)। আউট হয়ে যান এডওয়ার্ডসও (২৫)।
১১১ থেকে ১১৭ রানের মধ্যে ৪ উইকেট পড়ার পরে পরে আর কিছু করার ছিল না নেদারল্যান্ডসের। জরুরি রানরেট ক্রমাগত বাড়ছিল। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে শেষ হয় নেদারল্যান্ডসের ইনিংস। ২৫ রানে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ।