৫ গোল দিয়ে সাতে! ক্লেটন-নন্দদের দাপটে জয়ে ফিরল ইস্টবেঙ্গল

ইস্টবেঙ্গল – ৫

নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড – ০

চার ম্যাচ পর ইন্ডিয়ান সুপার লিগে জয়ের মুখ দেখল ইস্টবেঙ্গল। সোমবার যুবভারতীতে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে ৫-০ ব্যবধানে হারাল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। এ বারের আইএসএলে সব থেকে বড় জয় তুলে নিল ইস্টবেঙ্গল। সাত ম্যাচ খেলে লাল-হলুদ শিবিরের পয়েন্ট হল আট। আইএসএলের পয়েন্ট টেবিলের সাত নম্বরে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল। জোড়া গোল করলেন ক্লেটন সিলভা এবং নন্দকুমার সেকর।

সোমবার ঘরের মাঠে শুরু থেকেই আগ্রাসী প্রেসিং ফুটবল খেলতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। প্রতিপক্ষকে চাপে রাখাই লক্ষ্য ছিল কুয়াদ্রাতের দলের। তাঁর পরিকল্পনা এ দিন অনেকটাই কাজে লাগাতে পারলেন ক্লেটন সিলভারা। ফলও পেলেন হাতে নাতে।

ম্যাচের ৩ মিনিটের মাথায় ইস্টবেঙ্গল বক্সের মাথায় ফ্রিকিক পায় নর্থইস্ট। তাতে অবশ্য কোনও বিপদ ঘটেনি। আবার ৬ মিনিটের মাথায় আরও একটি ফ্রিকিক পায় তারা। তাতেও লাভ হয়নি কিছু। এর পর খেলার রাশ ধরে নেন লাল-হলুদ ফুটবলারেরা। ১০ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের একটি সুযোগ আটকে দেন নর্থইস্টের গোলরক্ষক মিরশাদ। ১২ মিনিটেও একটি ভাল সুযোগ পায় লাল-হলুদ ব্রিগেড। যদিও গোলের জন্য ইস্টবেঙ্গলকে বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ১৪ মিনিটে পিভি বিষ্ণুর বাড়িয়ে দেওয়া বল ধরে গোল করেন বোরহা হেরেরা। ২০ মিনিটের মাথায় ব্যবধান বৃদ্ধির সুযোগ পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ক্লেটনের ক্রস থেকে বল পেয়েও সুযোগ নষ্ট করেন সাউল ক্রেসপো। এর চার মিনিট পরেই দলের ব্যবধান বাড়িয়ে নেন অধিনায়ক। বাঁ দিক থেকে মন্দারের ভাসানো বলে মাথা ছুঁইয়ে বুদ্ধিদীপ্ত গোল করে ২-০ করেন ক্লেটন।

আক্রমণাত্মক ফুটবল বজায় রাখলেও প্রথমার্ধে আর গোল করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল শিবির। ব্যবধান বৃদ্ধি করতে না পারার দায় অবশ্য লাল-হলুদ ফুটবলারদেরই। একাধিক সহজ সুযোগ নষ্ট করেন তাঁরা। গোল করার সুযোগ পেয়েছিল নর্থইস্টও। বিশেষ করে প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময় দলের পতন আটকান গোলরক্ষক প্রভসুখন গিল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে খেলার গতি কিছুটা কমিয়ে দেন ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারেরা। তার মধ্যেও ৫২ মিনিটে বাইরে বল মেরে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন মহেশ সিংহ। পরের মিনিটেই প্রতিপক্ষের এক ফুটবলারের সঙ্গে সংঘর্ষে মাথায় চোট পান বোরহা। কিছু ক্ষণ খেলা বন্ধ রাখতে হয়। বোরহা অবশ্য মাঠ ছাড়তে চাননি। যদিও ৫ মিনিট স্পেনের মিডফিল্ডারকে তুলে নিয়ে হোসে পারদোকে নামান কুয়াদ্রাত।

ইস্টবেঙ্গল খেলার গতি কিছুটা কমানোর সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে নর্থইস্ট। বিক্ষিপ্ত ভাবে তারা দু’-একটা সুযোগ তৈরি করলেও খেলার নিয়ন্ত্রণ ছিল ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের পায়ে। বিশেষ করে লাল-হলুদের মাঝ মাঠ এ দিন খেলেছে তেল দেওয়া মেশিনের মতো। কুয়াদ্রাতের ছেলেরা জায়গাও নিয়েছেন ভাল। সব মিলিয়ে ঘরের মাঠে দৃষ্টিনন্দন, মসৃণ ফুটবলার উপহার দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল।

প্রথমার্ধে ২ গোল করা ইস্টবেঙ্গলের জয় ম্যাচের ৬২ মিনিটে কার্যত নিশ্চিত করে দেন নন্দকুমার। মরসুমের প্রথম ডার্বির নায়ক মহেশের ক্রস থেকে বল পেয়ে গোল করতে ভুল করেননি। ৪ মিনিট পরেই আবার তাঁর থেকে বল পেয়ে দলের চতুর্থ এবং নিজের দ্বিতীয় গোল করেন অধিনায়ক ক্লেটন। ০-৪ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর এক সঙ্গে তিন ফুটবলার পরিবর্তন করেন নর্থ ইস্ট কোচ জুয়ান পেদ্রো বেনালি। যুবভারতীতে জয় নিশ্চিত হওয়ার পরেও আক্রমণের ঝাঁঝ কমায়নি ইস্টবেঙ্গল। ৮১ মিনিটে মহেশের পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের পঞ্চম গোল করেন নন্দকুমার। এর পর আর ক্লেটন, মহেশকে মাঠে রাখেননি ইস্টবেঙ্গল কোচ। খেলা শেষ হওয়ার ২ মিনিট আগে পেনাল্টি পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি নর্থ ইস্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.