হিমাচল প্রদেশ এবং পার্শ্ববর্তী উত্তরাখণ্ডে বর্ষার ‘তাণ্ডব’ অব্যাহত। রবিবার রাতে হিমাচলের একটি গ্রামে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে অন্তত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে আরও কয়েক জনকে। টানা বৃষ্টিতে ফুঁসে উঠেছে বিপাশা নদী। যার জেরে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডও। মুহুর্মুহু পাহাড়ি ধসে জনজীবন ব্যাহত হয়েছে এই দুই রাজ্যেই।
রবিবার রাতে মেঘভাঙা বৃষ্টির কবলে পড়ে হিমাচলের সোলান এলাকার জাডোন গ্রাম। আচমকা জলের তোড়ে ভেসে যায় গ্রামের একাংশ। সাত জনের মৃত্যু হয় তাতে। আরও ছ’জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সোলানের ডিভিশনাল কমিশনার মনমোহন শর্মা।
কয়েক দিন ধরেই হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টি চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেড়েছে। নদীর জলস্তরও বৃদ্ধি পেয়েছে। খরস্রোতা বিপাশা নদীর জল বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। প্রায়ই কোথাও না কোথাও ধস নামছে। ধসের কারণে রাস্তা আটকে বিপদে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। দুই রাজ্যের মোট ৬২১টি রাস্তা আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। কোথাও মেরামতির কাজ চলছে। কোথাও বৃষ্টির কারণে সম্ভব হচ্ছে না তা-ও। শুধু শিমলাতেই ৫৯টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে। শিমলা এবং চণ্ডীগড়ের সংযোগকারী শিমলা-কালকা জাতীয় সড়কে ধসের কারণে গত দু’সপ্তাহ ধরে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ধস নেমেছে ঋষিকেশ-চম্বা জাতীয় সড়কেও।
হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু সোমবার পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত স্কুল এবং কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে স্কুল বন্ধের মেয়াদ বৃদ্ধি পেতে পারে।
ক্রমাগত বৃষ্টি এবং ধস চাষের কাজে অনেক ক্ষতি করছে। রাজ্যের নানা অংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়িঘরও। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তরফে এলাকার মানুষকে যথাসম্ভব বাড়ির ভিতরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় না বেরোনো, বিশেষত, বিপাশা বা তার শাখানদীগুলির ধারেকাছে না যাওয়ার জন্য স্থানীয়দের অনুরোধ করেছে প্রশাসন। হরিদ্বারের গঙ্গাও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।
আশার কথা শোনাতে পারছে না মৌসম ভবনও। তারা আগেই জানিয়েছিল, হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায় আগামী কয়েক দিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি চলবে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ১৭ অগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে এই দুই রাজ্যে। উত্তরাখণ্ডের ছ’টি জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।