নিশ্বাসে বিষ না যায়! তাই ছোটদের স্কুলে যেতে নিষেধ করল দিল্লি। আপাতত তাদের বাড়িতেই থাকার পরামর্শ দিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, দিল্লির বাতাস শ্বাস নেওয়ার উপযুক্ত হলে তবেই খুলবে প্রাথমিক স্কুলগুলি। এ ছাড়া উচ্চ প্রাথমিক স্কুল চালু থাকলেও, তার ছাত্রছাত্রীদের স্কুলের মুক্তাঙ্গনে থাকতে নিষেধ করেছে দিল্লি প্রশাসন।
দিল্লিতে এখন ২৭৫৫টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। উচ্চ প্রাথমিক স্কুল রয়েছে ৯৩৯টি। এ ছাড়া ৩৭৭টি মাধ্যমিক স্তরের এবং ১৬৮৪টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল মিলিয়ে মোট ৫৭৫৫টি স্কুল আছে দিল্লিতে। এর মধ্যে শনিবার অর্থাৎ ৫ নভেম্বর থেকেই বন্ধ হচ্ছে ২৭৫৫টি স্কুল। শুক্রবার এই ঘোষণা করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, আপাতত উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলি বন্ধ করা হচ্ছে না। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা যেন স্কুলের বাইরে মুক্তাঙ্গনে সময় না কাটায়। এর পাশাপাশি দূষণের কথা মাথায় রেখে দিল্লির রাজপথে জোড়-বিজোড় নিয়মও নতুন করে চালু করার কথা ভাবছে সরকার।
উল্লেখ্য, এর আগে দূষণ মোকাবিলায় গাড়ির নম্বর প্লেটের সংখ্যার ভিত্তিতে জোড়-বিজোড় প্রকল্প চালু করেছিল দিল্লি সরকার। এই প্রক্রিয়ায় জোড় সংখ্যার নম্বর প্লেট সম্পন্ন গাড়িগুলি একদিন রাস্তায় নামবে। তার পরের দিন চলবে বিজোড় সংখ্যার নম্বর প্লেটের গাড়ি। এতে দূষণ কমাতে কিছুটা সফলও হয়েছিল দিল্লি। সাম্প্রতিক দূষণ পরিস্থিতি সামলাতে তাই পুরনো নীতিতে ফিরতে চাইছে দিল্লি সরকার।
বৃহস্পতিবারই দিল্লি-এনসিআর-এ বায়ুর গুণমান খারাপ হওয়ার প্রেক্ষিতে চার স্তরীয় ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘দ্য কমিশন অফ এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট’।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, দিল্লি-এনসিআর-এ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে পুরনো ইঞ্জিনের ডিজেল গাড়ির ব্যবহার। শুধু মাত্র বিএস-৬ ইঞ্জিন যুক্ত এবং জরুরি পরিষেবাতে থাকা যানবাহন এই নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পাবে।
প্রশাসনের তরফে বৈদ্যুতিক এবং সিএনজি চালিত ট্রাক ছাড়া অন্য ট্রাকের দিল্লিতে প্রবেশ করার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে এই নিয়ম থেকে ছাড় দেওয়া হবে ওষুধের মতো অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বহনকারী ট্রাকগুলিকে।
দিল্লি-এনসিআর হাইওয়ে, উড়ালপুল, ওভারব্রিজ, পাইপলাইন নির্মাণ এবং ধ্বংসের কাজও আপাতত স্থগিত রাখা হবে। একই সঙ্গে বিশুদ্ধ জ্বালানি নিয়ে কাজ করছে না এ রকম কলকারখানাগুলিকেও কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু মাত্র দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্যের শিল্প এবং জীবনদায়ী চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক কারখানাগুলি এই বিধিনিষেধ থেকে ছাড় পাবে।
দিল্লিতে এক দিন অন্তর জোড়-বিজোড় নম্বর প্লেটযুক্ত গাড়ির রাস্তায় নামার যে নিয়ম চালু ছিল তা আরও কড়া ভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে স্কুল বন্ধ থাকলেও অনলাইন পঠনপাঠন চালু থাকবে বলেই খবর।