বৃদ্ধি দু’দিকেই। কয়েক দিন এগিয়ে এসে স্কুলে এ বার গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হয় ২ মে আবার শেষের দিকেও সেই ছুটি ২৬ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এতে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠনের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কার পাশাপাশি শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রেও জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে শিক্ষা শিবিরের অভিযোগ।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বহু শিক্ষককে গরমের ছুটির মধ্যেই সাধারণ বদলির নির্দেশপত্র দিয়ে বলেছে, সেটি পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে পুরনো স্কুল থেকে ‘রিলিজ়’ বা ছাড়পত্র নিয়ে তার পাঁচ দিনের মধ্যে নতুন স্কুলে যোগ দিতে হবে। কিন্তু বিভিন্ন জেলার শিক্ষা দফতর গ্রীষ্মাবকাশের মধ্যে নতুন স্কুলে শিক্ষকদের যোগ দিতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। তাই বদলি নিয়ে অবিলম্বে একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করার জন্য রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কাছে দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষকেরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক শিক্ষক সন্দেশখালির রবীন্দ্র শিক্ষা নিকেতন থেকে উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বদলি হয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের কাছে ঘোষপুর জুনিয়র হাইস্কুলে। তিনি বলেন, “স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর কাছ থেকে ‘রেকমেন্ডেশন লেটার’ বা সুপারিশপত্র আসে ১১ মে। ১৩ মে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে আসে নতুন স্কুলের নিয়োগপত্র। বলা হয়, পাঁচ দিনের মধ্যে নতুন স্কুলে যোগ দিতে হবে। কিন্তু জেলা শিক্ষা দফতরের অনুমতি মিলছে না। নতুন স্কুলে যোগ দিতে না-পারায় এক মাসের বেতনও কেটে নিতে পারেবলে শুনছি।”
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, “বহু শিক্ষকই গরমের ছুটিতে বদলির চিঠি পেয়ে সমস্যায় পড়েছেন। শিক্ষা দফতরের নতুন কোনও নির্দেশিকা তাই জরুরি হয়ে পড়েছে।”
শিক্ষকদের একাংশ জানান, শিক্ষা দফতরের নিয়ম অনুযায়ী নতুন স্কুলে যোগ দিয়ে হাজিরা খাতায় সই করার কথা। প্রশ্ন উঠছে, ছুটির মধ্যে কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীই তো হাজিরা খাতায় সই করছেন না। তা হলে নতুন শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী স্কুলে যোগ দিয়ে কী ভাবে খাতায় সই করবেন?
‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের দাবি, “বদলি হওয়া শিক্ষকদের নিয়োগপত্র গরমের ছুটির পরে দেওয়া হোক বা নতুন স্কুলে যোগদানের সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হোক।”
শিক্ষা দফতরের এক কর্তা অবশ্য জানান, নতুন স্কুলে যোগ দিতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। প্রধান শিক্ষকেরা গরমের ছুটিতেও স্কুলে যান। তাঁরাই সব ব্যবস্থা করে দেবেন। তিনি বলেন, ‘‘কারও নতুন স্কুলে যোগ দিতে সমস্যা হলে তিনি মধ্যশিক্ষা পর্ষদে লিখিত আর্জি জানাতে পারেন, তাঁকে নতুন স্কুলে যে-দিন যোগ দিতে বলা হয়েছে, সেই দিন থেকেই যেন ‘অন-ডিউটি’ ধরা হয় এবং স্কুল খোলার দিন থেকেই তাঁকে যেন হাজিরা খাতায় সই করতে দেওয়া হয়। তা হলেই আর কোনও সমস্যা হবে না।’’ বদলি হওয়া শিক্ষকদের বক্তব্য, শিক্ষা দফতর মুখে যা বলছে, তা লিখিত আকারে বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করলেই সব পক্ষের সুবিধা হয়।