এ কী করলেন সাত্ত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডি ও চিরাগ শেট্টি (Satwiksairaj Rankireddy And Chirag Shetty)! অভাবনীয় বললেও কম, অবিশ্বাস্য়ও যথার্থ নয়। রবিবার যখন আইপিএলে বুঁদ ভারতবাসী, তখন দুবাইয়ে ‘সোনালি’ ইতিহাস লিখে ফেলেলেন ভারতের গর্ব সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগ। ৩০ এপ্রিল ২০২৩, রেড লেটার ডে হয়ে গেল ভারতের ব্যাডমিন্টন ইতিহাসে। দেশের প্রথম ডাবলস জুটি হিসেবে সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগ সোনা জিতলেন ব্যাডমিন্টন এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপে (Badminton Asia Championships)। বিশ্বের ষষ্ঠ জুটি এদিন অষ্টম জুটিকে মাটি ধরিয়ে দিলেন। সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগের ব়্যাকেটে উড়ে গেল মালয়েশিয়ার ওংগ ইউ সিন ও তিও এ ই-কে (Ong Yew Sin And Teo Ee Yi)। দুবাইয়ের আল নাসের ক্লাবের শেখ রশিদ বিন হামদান ইন্ডোর হলে, (Sheikh Rashid Bin Hamdan Indoor Hall, Al Nasr Club) তিন ঘণ্টার লড়াইয়ে সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগরা জিতলেন ১৬-২১, ২১-১৭ ও ২১-১৯ ব্যবধানে। ব্যাডমিন্টন এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপে এটি ভারতের দ্বিতীয় সোনা। ১৯৬৫ সালে শেষবার দীনেশ খান্না (Dinesh Khanna) পুরুষদের সিঙ্গলসে সোনা পেয়েছিলেন। ৫৮ বছর পর এল ফের সোনা। সর্বভারতীয় ব্যাডমিন্ট অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sarma) ২০ লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কারের ঘোষণা করেছেন সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগের জন্য।
সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগ প্রথম গেম হেরেছিলেন। কিন্তু দুরন্ত প্রত্যাবর্তনে তাঁরা দ্বিতীয় গেম ৭-১৩ জিতে নেন, সেখান থেকে ১৬-২১, ২১-১৭ ও ২১-১৯ ব্যবধানে আসে জয়। ওপেনিং গেম হেরে কিছুটা বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগ। দ্বিতীয় গেমেও ৬-১৩ পিছিয়ে ছিলেন। ওংগ ইউ সিন ও তিও এ ই-কে যেন শুরুতে ভারতীয় জুটিকে মুখই তুলতে দিচ্ছিলেন না। ছন্দই পাচ্ছিলেন না তাঁরা। সত্যি বলতে নিজেদের সেরা খেলাটাই খেলতে পারছিলেন না দেশের তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই শাটলার। কয়েকটি আনফোর্সড এররও করে ফেলেন তাঁরা। দুবাইয়ের দর্শকের প্রবল সমর্থনে দ্বিতীয় গেমে ভারত দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করে ২১-১৭ করে। পরের গেমে ১৯ পয়েন্টের মধ্যে ১৫ পয়েন্টেই পকেটে পুরে ফেলেন তাঁরা। তৃতীয় গেমেও ভারত ১১-১৫ পিছিয়েছিল। কিন্তু দুবাইয়ের সমর্থনই সাত্ত্বিকসাইরাজদের তাতিয়ে দেয় এবং ফিনিশিং লাইনে নিয়ে যায়। মালয়েশিয়া ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়েছিল কিন্তু মালয়েশিয়ানদের পক্ষে তা যথেষ্ট ছিল না। চলতি বছর এই ভারতীয় জুটির প্রথম বড় খেতাব। গতবছর কমনওয়েলথে সোনার সঙ্গেই সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগ জিতেছিলেন ঐতিহাসিক থমাস কাপ। দুবাইয়ে ইতিহাস লেখার পরেই সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগ ছুটে যান তাঁদের ডাবলস কোচ মাথিয়ায় বোয়ের কাছে। এই ড্যানিশ কোচই তাঁর শিষ্যদের শুরু থেকে তাতিয়ে গিয়েছিলেন ও সাইডলাইন থেকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছিলেন।