সন্দেশখালির নারীবাহিনী বারাসতের পথে, প্রধানমন্ত্রী ‘নির্যাতন-সন্দেশ’ শোনাতে চান নির্বাচনের ভারতকে

সন্দেশখালির মহিলারা চললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে। বুধবার সাতসকালে নৌকা, বাসে চেপে সন্দেশখালির বিভিন্ন জায়গা থেকে মহিলাদের নিয়ে কাছারি ময়দানের সভাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের অভাব-অভিযোগের কথা শোনাতে চান মহিলারা। বিজেপির লক্ষ্য, সেই দৃশ্যকে মুহূর্তে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া।

বিজেপির পরিকল্পনা ছিল, বারাসতের সভায় সন্দেশখালির মহিলাদের নিয়ে আসার। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকা থেকে মহিলাদের নিয়ে কাছারি ময়দানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে বিজেপি। আরামবাগ এবং কৃষ্ণনগরের সভায় মোদী সন্দেশখালি প্রসঙ্গে রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন। সেই সূত্র ধরে বারাসতে আক্রমণের মাত্রা আরও বেশি হবে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, বারাসতের পাশের লোকসভা কেন্দ্র হল বসিরহাট। তারই অন্তর্গত সন্দেশখালি। মোদী বারাসতে সন্দেশখালি নিয়ে আরও বেশি করে আক্রমণাত্মক হতে পারেন বলেই মনে করছে দল। সেই কারণে এই সভাকে ‘জাতীয় কর্মসূচির মঞ্চ’ বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি।

সেই মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে জেনে উচ্ছ্বাসিত সন্দেশখালির মহিলারাও। বাসে চেপে সভার পথে চলা এক মহিলা বলেন, ‘‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাচ্ছি। সেখানে মোদীকে আমাদের অভাব-অভিযোগের কথা বলব। আরও কিছু বলার আছে, যেটা আমরা সভাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকেই বলব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা আমাদের বিপদের সময় পাশে দাঁড়াননি কিন্তু মোদী আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ জন্য আমরা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানাতে চাই।’’ অপর এক মহিলা বলেন, ‘‘মোদীজি ডেকেছেন। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে আমরা কী অবস্থায় বেঁচে আছি তা জানাব। তৃণমূলের অত্যাচারের বিষয়টি আমরা বলব। আমাদের আশা, তিনি ব্যাপারটা দেখবেন। তাই সবাই মিলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।’’

এই লক্ষেই সোমবার থেকে মহিলা মোর্চা সর্বভারতীয় স্তরে ‘শক্তিবন্ধন’ নামে কর্মসূচি শুরু করেছে। এর অঙ্গ হিসাবে সোমবার বিভিন্ন রাজ্যে ‘রান ফর মোদী’ শীর্ষক ম্যারাথন হয়েছে। মঙ্গলবার মোর্চা দেশ জুড়ে এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে মহিলাদের বাইক মিছিলের পরিকল্পনা নিয়েছিল। বুধবার, তিন দিনের কর্মসূচি শেষ হচ্ছে বারাসতে মোদীর বক্তৃতার মধ্যে দিয়ে। সেই বক্তৃতা দেশের সর্বত্র সরাসরি সম্প্রচার করবে মহিলা মোর্চা। ঠিক হয়েছে, বিজেপির সাংগঠনিক জেলা কেন্দ্র এবং মণ্ডল মিলিয়ে মোট ৫,২৫৭ জায়গায় মহিলাদের সংগঠিত করা হবে। এর মাধ্যমে মোদী বারাসতের মঞ্চে সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে কথা বলছেন, সেই ছবি মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে। সেই লক্ষ্যেই সন্দেশখালি থেকে মহিলাদের আনা হচ্ছে বারাসতে। তবে, শুধু মহিলাদের হাজির করাই নয়, বারাসতে প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চ ও সমাবেশস্থল মূলত মহিলাদেরই দখলে থাকবে। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি বক্তা হতে পারেন মহিলা মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি বনথি শ্রীনিবাসন এবং রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্রের মতো মহিলা নেত্রীও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.