তাণ্ডবের খবর পেয়েই ছুটে যান সাধের ‘তাজ’-এ, তার পর কী করেছিলেন রতন টাটা?

তাঁর সাধের হোটেলে ঢুকে নির্বিচারে হত্যালীলা চালিয়েছিল পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিরা। অতিথি হোক বা হোটেলের কর্মী, কাউকেই রেয়াত করেনি তারা। আর সেই খবর কানে যেতে আর চুপ করে বসে থাকতে পারেননি তিনি। একরকম জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ঘটনাস্থলে দৌড়ে যান শিল্পপতি।

তিনি, রতন টাটা। বুধবার, ৯ অক্টোবর, ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন দেশের প্রবাদপ্রতিম এই শিল্পপতি। বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তাঁর মৃত্যুর পর নতুন করে সংবাদমাধ্যমে ঘুরেফিরে এসেছে ২৬/১১-য় মুম্বইয়ের ঐতিহ্যবাহী ‘তাজ হোটেল’-এ হামলার প্রসঙ্গ। যা জীবনের ‘কঠিনতম সময়’ ছিল বলে স্বীকার করেছিলেন রতন টাটা।

তাজ হোটেলে ঢুকে পাক জঙ্গিদের খুঁজে খুঁজে নিকেশ করতে ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড বা এনএসজিকে দায়িত্ব দেয় সরকার। সেই মতো শুরু হয় কম্যান্ডো অপারেশন। ওই সময়ে ঐতিহ্যবাহী হোটেলটির এক প্রান্তে কোলাবায় ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন রতন টাটা। তখন তাঁর বয়স ছিল ৭০ বছর।

২৬/১১-র জঙ্গি হামলায় মোট ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যার মধ্যে তাজ হোটেলে প্রাণ হারান ৩৩ জন। নিহতদের মধ্যে ১১ জন ছিলেন হোটেলের কর্মী। ওই নারকীয় ঘটনার পর পুনরায় হোটেলটিকে চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন রতন টাটা। পাশাপাশি, নিহত ও আহতদের আর্থিক সাহায্য করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

সেই প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন রতন টাটা। সংবাদ সংস্থা বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহত কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাঁদের হাতে বেতন বাবদ ওই ব্যক্তির যাবতীয় টাকা তুলে দিয়েছিলেন রতন। পাশাপাশি, অতিরিক্ত আর্থিক সাহায্যও করা হয়েছিল।

পরবর্তী কালে তাজ পাবলিক সার্ভিস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট তৈরি করে টাটা গোষ্ঠী। শু‌ধু তাই নয়, আহত হোটেলকর্মীদের বাড়িতে গিয়েও তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন রতন টাটা। ওই ঘটনার কথা স্মরণ করে ২০২০ সালে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন তিনি।

সেখানে রতন টাটা লিখেছিলেন, ‘‘১২ বছর আগের নির্মম ধ্বংসযজ্ঞকে কোনও ভাবেই ভোলা যাবে না। তবে তা ব্যর্থ করার জন্য যে ভাবে মুম্বইয়ের বিভিন্ন ধরনের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছিলেন, তা সত্যিই অসাধারণ। সমস্ত মতভেদকে দূরে সরিয়ে রেখে তাঁরা একত্রিত হয়েছিলেন।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.