২১০ রান করেও হারতে হল চেন্নাই সুপার কিংসকে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শতরান করেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়। ঝোড়ো অর্ধশতরান করেন শিবম দুবে। তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। রান তাড়া করতে নেমে শতরান করেন মার্কাস স্টোইনিস। শেষ দিকে তাঁকে সঙ্গ দেন নিকোলাস পুরান। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকেন স্টোইনিস। টান টান ম্যাচে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তিন বল বাকি থাকতে জিতে যায় লখনউ।
এই ম্যাচে রাচিন রবীন্দ্রকে খেলায়নি চেন্নাই। সেই কারণে অজিঙ্ক রাহানের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন রুতুরাজ। রাহানে এই ম্যাচেও রান পাননি। প্রথম ওভারের শেষ বলে তাঁকে আউট করেন ম্যাট হেনরি। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ভাল ক্যাচ ধরেন লখনউয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। এই ম্যাচে দলে ফেরা ড্যারিল মিচেলও রান পাননি। ১১ রান করে যশ ঠাকুরের বলে ফেরেন তিনি। চার নম্বরে নামা রবীন্দ্র জাডেজা ১৬ রান করেন।
বাকিরা রান করতে না পারলেও এক দিকে টিকেছিলেন রুতুরাজ। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাট করছিলেন তিনি। হাওয়ায় না খেলে মাটিতে বেশি শট খেলছিলেন দলের অধিনায়ক। ২৮ বলে অর্ধশতরান করেন রুতুরাজ। জাডেজা আউট হওয়ার পরে শিবম মাঠে নামেন। শুরুতে একটু ধীরে খেললেও ম্যাচ যত এগোল, হাত খুলতে শুরু করলেন তিনি। যশকে এক ওভারে পর পর তিনটি ছক্কা মারেন শিবম।
একটা সময় মনে হচ্ছিল, ১৬০-৭০ রানের বেশি হবে না চেন্নাইয়ের। কিন্তু রুতুরাজ ও শিবমের জুটি দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। ধীরে ধীরে নিজের শতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন রুতুরাজ। পর পর দু’বলে ছক্কা ও চার মেরে আইপিএলে নিজের দ্বিতীয় শতরান করেন রুতু। ২০০ রানের বেশি করার লক্ষ্য নিয়ে খেলছিলেন দুই ব্যাটার। লখনউয়ের পেসারেরা চাপে পড়ে বাজে বল করছিলেন।
২২ বলে অর্ধশতরান করেন শিবম। তিনিও কোনও বোলারকে রেয়াত করছিলেন না। আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠছিলেন চেন্নাইয়ের সমর্থকেরা। শতরানের জুটি হয় দুই ব্যাটারের মধ্যে। ২৭ বলে ৬৬ রান করে রান আউট হন শিবম। শেষ দু’বলের জন্য ব্যাট করতে নামেন ধোনি। কিন্তু স্ট্রাইকিং প্রান্তে ছিলেন রুতুরাজ। শেষ বলে ব্যাট করার সুযোগ পান তিনি। শেষ বলে চার মারেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১০ রান করে চেন্নাই। রুতুরাজ ১০৮ রান করে অপরাজিত থাকেন।
২১১ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি লখনউয়ের। দীপক চাহারের বলে শূন্য রানে আউট হন কুইন্টন ডি’কক। অধিনায়ক লোকেশ রাহুল করেন ১৬ রান। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে আউট হন তিনি। পাওয়ার প্লে চলায় তিন নম্বরে নামিয়ে দেওয়া হয় স্টোইনিসকে। সেই সিদ্ধান্ত কাজে লেগে যায়। তিনি প্রথম বল থেকেই মারমুখী মেজাজে ছিলেন। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে বড় শট খেলছিলেন। কিন্তু চার নম্বরে নামা দেবদত্ত পড়িক্কল ধীরে খেলায় চাপ বাড়ছিল স্টোইনিসের উপর। ২৮ বলে অর্ধশতরান করেন স্টোইনিস।
১৯ বলে ১৩ রান করে মাথিশা পাথিরানার বলে আউট হন পড়িক্কল। স্টোইনিস এক দিকে বড় শট খেলছিলেন। শেষ ৬ ওভারে লখনউয়ের জিততে দরকার ছিল ৮৭ রান। সেখান থেকেই রানের গতি বাড়াতে শুরু করে লখনউ। স্টোইনিসের পাশাপাশি নিকোলাস পুরানও হাত খোলা শুরু করেন। মুস্তাফিজুরের ওভারে আসে ১৩ রান। শার্দূল ঠাকুরকে নিশানা করেন লখনউয়ের দুই ব্যাটার। ২০ রান দেন তিনি।
২৪ বলে দরকার ছিল ৫৪ রান। পাথিরানার ওভারে বড় শট মারতে গিয়ে ৩৪ রান করে ফেরেন পুরান। বড় ধাক্কা খায় লখনউ। দলকে জেতানোর সব দায়িত্ব গিয়ে পড়ে স্টোইনিসের কাঁধে। ৫৬ বলে শতরান করেন তিনি। আইপিএলে এটি স্টোইনিসের প্রথম শতরান।
শেষ ১২ বলে জিততে দরকার ছিল ৩২ রান। তখনও লড়াই ছাড়েনি লখনউ। চাপে পড়ে ফিল্ডিংয়ে ভুল করেন চাহার। একটি বাড়তি চার পেয়ে যায় লখনউ। ১৯তম ওভারে ওঠে ১৫ রান। স্টোইনিসের পাশাপাশি হাত খোলেন দীপক হুডাও। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৭ রান। বল করতে আসেন মুস্তাফিজুর। প্রথম বলেই ছক্কা মারেন স্টোইনিস। পরের দুই বলে মারেন চার। তৃতীয় বল নো করেন মুস্তাফিজুর। ফলে পরের বলে ফ্রি হিট পায় লখনউ। সেই বলেই খেলা শেষ করে দেন স্টোইনিস। তিন বল বাকি থাকতে ম্যাচ জেতে লখনউ। চেন্নাইয়ের মাঠে সর্বাধিক রান তাড়া করে জেতে লখনউ। ১২৪ রান করে অপরাজিত থাকেন স্টোইনিস।