রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজিত হয়েছে ভারতে! পুতিনের ভাগ্য ঠিক করতে ভোটগ্রহণ হচ্ছে কেরলে

কেরলেও চলছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ! ভ্লাদিমির পুতিনই কি আবারও মসনদে ফিরবেন নাকি পালাবদল হবে, তা ঠিক করতেই ভোট দিচ্ছেন সে দেশের বাসিন্দারা। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া আগামী রবিবার পর্যন্ত চলবে। কিন্তু এই সময়ে রাশিয়ার যে নাগরিকেরা ভারতে রয়েছেন, তাঁরা যাতে ভোটদান থেকে বঞ্চিত না হন, সেই কারণেই কেরলে ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘অল রাশিয়া পিপল্‌স ফ্রন্ট’-এর প্রার্থী তথা বর্তমান প্রেসিডেন্ট পুতিন ছাড়াও লড়ছেন রুশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী নিকোলাই খারিতনভ। রাশিয়ার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূল লড়াই পুতিন এবং নিকোলাইয়ের মধ্যে। এ ছাড়াও লড়াইয়ে রয়েছেন লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টির লিওনিদ স্লুৎস্কি এবং ‘ইউনিয়ন অফ প্রোগ্রেসিভ পলিটিক্যাল ফোর্সেস’-এর ভ্লাদিস্কভ ডাভানকোভও।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে। সেখানকার অনারারি কনস্যুলেট অফ রাশিয়ান ফেডারেশনে ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন ভারতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে? রাশিয়ান হাউসের ডিরেক্টর রাথেশ নায়ার সংবাদমাধ্যমে জানান, রাশিয়ান ফেডারেশন এই নিয়ে তৃতীয় বার এই ভোটগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে। ভারতে থাকা রুশ নাগরিক এবং পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কেরলে বসে নিজের দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পেরে খুশি রাশিয়ার নাগরিকেরা। তেমনই এক মহিলা উলিয়া। শুক্রবার সকাল সকালেই তিনি ভোট দিতে উপস্থিত হয়েছিলেন রাশিয়ান ফেডারেশনে। ভোটদানের পর সংবাদমাধ্যমে উলিয়া বলেন, ‘‘আমরা যাঁরা আজ ভোট দিতে এসেছি, তাঁরা সকলেই রাশিয়ার নাগরিক।’’

এর পরই তিনি যোগ করেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কেউ কর্মসূত্রে ভারতে এসেছে বসবাস করছি, আবার কেউ ভারতে ঘুরতে এসেছেন। কিন্তু এখানে থেকেও দেশের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে অংশ নিতে পেরে খুশি আমরা। দেশের নাগরিক হিসাবে ভোট দেওয়া, আমাদের দায়িত্ব। আমাদের এই সুযোগ দেওয়ার জন্য কনস্যুলেট জেনারেলের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’’ রবিবারই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলপ্রকাশ হবে।

২০১৮-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় পুতিন ‘কথা দিয়েছিলেন’, ২০২৪ সালের পরে আর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন না। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই সিদ্ধান্ত বদলেছেন তিনি। গত ২৩ বছর ধরে রাশিয়ায় কার্যত দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হয়ে আছেন পুতিন। এ বারের প্রেসিডেন্ট ভোটে পুতিনের জয় কার্যত নিশ্চিত বলেই ধারণা রুশ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অধিকাংশের। অর্থাৎ, তাঁর সামনে এখন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দুই নেতার রেকর্ড ভাঙা সময়ের অপেক্ষা। টানা ২৪ বছর ক্রেমলিনে ক্ষমতায় ছিলেন জোসেফ স্তালিন এবং লিওনিদ ব্রেজনেভ। এ বার মস্কোর কুর্সিতে বসতে পারলে নতুন নজির স্থাপন করবেন পুতিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.