সেন্ট্রাল ইউক্রেনে ফের ভয়াবহ হামলা চালাল রাশিয়া। নিপ্রো শহরে ইউক্রেনীয় সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে মস্কোর বাহিনী। অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। জখম ৩০-এরও বেশি।
আঞ্চলিক সেনা প্রধান জেনাডি কোরব্যান বলেন, ‘‘রাশিয়ার ইসকানদর ক্ষেপণাস্ত্র আজ সকালে আছড়ে পড়ে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। ১০ জনের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে। ৩০ থেকে ৩৫ জন জখম।’’
তিন মাসের বেশি যুদ্ধ চলছে ইউক্রেনে। গোড়ার দিকে এ শহর মারাত্মক হামলার শিকার হয়। বাসিন্দারা শহর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। এর পর থেকে অনেকটাই শান্ত হয়ে গিয়েছিল নিপ্রো। বিশেষ করে রাশিয়ার স্থলবাহিনী পিছু হটার পরে। বহু দিন বাদে আজ ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকাজুড়ে। তড়িঘড়ি অঞ্চলের গভর্নর ভ্যালেনটিন রেজ়নিতচেঙ্কো সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘ভয়াবহ ধ্বংস’। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা দ্রুত উদ্ধার কাজে নেমে পড়েন। কিন্তু এ পর্যন্ত যা বোঝা যাচ্ছে, তাতে ১৭ মে-র তুলনায় কম ক্ষতি হয়েছে। দশ দিন আগে কিভের একটি সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। এ সপ্তাহেই সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, ওই দিনের হামলায় ৮৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
পূর্ব ইউক্রেনেও রাশিয়ার হামলা অব্যাহত রয়েছে। লুহানস্কের গভর্নর সেরহি হাইডাই জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলের সেভেরোডনেৎস্ক শহরের দুই-তৃতীয়াংশ দখল করে নিয়েছে রুশ বাহিনী। ডনবাসে সবচেয়ে বেশি জনবসতি এই শহরে। এখনও এটি ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু আর কত দিন, জানা নেই। জোরদার যুদ্ধ চলছে। ইউক্রেনের অভিযোগ, সেভেরোডনেৎস্কের ৯০% ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। এর মধ্যে ৬০% সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। অন্তত ১৫০০ বাসিন্দা মারা গিয়েছেন এই শহরে। ডনেৎস্কের লিম্যান এলাকা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। মস্কো জানিয়েছে, ডনবাসে তারা ‘স্বাধীনতা’ আনবেই। ডনবাসের দুই অঞ্চল ডনেৎস্ক ও লুহানস্কে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়ার সমর্থনপ্রাপ্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলিও। লুহানস্কের প্রায় পুরোটাই (৯০%) এখন রাশিয়ার হাতে। এ দিকে, অভিযোগ উঠেছে, কৃষ্ণসাগরে অন্তত ৫০০ সোভিয়েত যুগের মাইন ছড়িয়ে রেখেছে রাশিয়া। ফলে বিদেশ থেকে আসা পণ্য সমুদ্রপথে ঢুকতে পারছে না ইউক্রেনে।