ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন রাশিয়ান সেনা৷ বার্তা সংস্থাগুলি জানিয়েছে, রাশিয়ান সেনাদের বহর রাজধানী কিয়েভ থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে৷
তুরস্কে রাশিয়া ও ইউক্রেনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের মাঝেই হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া৷ সেনাদের বেশ কয়েকটি বহর রাজধানীর দিকে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শনিবার রাতে ইউক্রেনের খারকিভ, সুমি ও মারিউপোল-সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া৷
বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘সন্ধিক্ষণ’ বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি৷ ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, রাজধানী কিয়েভের উত্তরাঞ্চলে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর একটি বড় বহর দেখা গিয়েছে৷ ইউক্রেনের পালটা হামলায় নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এমন বহরকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের৷
সংবাদমাধ্যমগুলে জানায়, শনিবার ভোররাতে রাশিয়ান সৈন্যদের কিয়েভ অভিমুখে অভিযান জোরদার করে৷ সেইসময় রাজধানীর আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায় রাশিয়ান সেনাদের গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গিয়েছে৷
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার স্থানীয় সময় ভোররাতে কিয়েভের উত্তর-পূর্বে ব্রোভারি জেলায় রুশ বাহিনীর গোলাবর্ষণে হিমায়িত পণ্যের একটি গুদামে আগুন লেগে যায়৷ তাছাড়া রাজধানীর দক্ষিণে অবস্থিত একটি ইউক্রেনের একটি সামরিক প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালিয়েছে রাশিয়া৷ তাছাড়া দেশটির বন্দরনগরী মারিউপলের একটি প্রাচীন মসজিদেও হামলা চালিয়েছে রাশিয়ান সেনা৷ মসজিদটিতে শিশু-সহ প্রায় ৮০ জন সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে৷
মেয়রকে অপহরণের অভিযোগ
তার আগে ইউক্রেনের মেলিটোপোল শহরের মেয়রকে রাশিয়ার সেনা অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের৷ মেয়রের মুক্তির দাবি জানিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘মেয়রের অপহরণের ঘটনায় রাশিয়ার দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে৷ আর এটি কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। বরং একটি জনগোষ্ঠীর উপর চালানো অপরাধ৷ এটি গণতন্ত্রের উপর চালানো অপরাধ৷’ উল্লেখ্য, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের এই শহরটি হামলা শুরুর প্রথম দিকেই দখলে নেয় রুশ সেনা৷
যুদ্ধবিরতির আহ্বান
এদিকে রাশিয়ার হামলার পর বিভিন্ন শহর ও গ্রামাঞ্চলে আটকে পড়া সাধারণ মানুষকে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন৷ দেশটির রাজধানী কিয়েভ, মারিউপোল, সুমি-সহ অন্যান্য শহরগুলি থেকে সাধারণ মানুষকে বেরিয়ে যাওয়া সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক৷
শনিবার মারিউপলে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সেখানকার সাধারণ মানুষকে বেরিয়ে যেতে করিডর তৈরি করার কথা রয়েছে৷ ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক বলেন, ‘আমি আশা করি মানবিক করিডোরগুলি খুলে দেওয়া হবে৷ রাশিয়ার সৈন্যরা যুদ্ধবিরতি মেনে সাধারণ মানুষকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেবে৷’
ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর একে একে দেশটির বিভিন্ন শহরের অবরোধ ও দখল করে রাশিয়ান সেনা৷ শনিবার ভোররাতের পর রাশিয়ান স্থলবাহিনী রাজধানী কিয়েভের খুব কাছাকাছি চলে আসে৷ রাজধানীর খুব কাছে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর উপস্থিতির প্রেক্ষিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন ইতিমধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সন্ধিক্ষণে উপনীত হয়েছে৷’
(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)