ভারত-ইজরায়েল বন্ধুত্বের মৈত্রী সেতু আরএসএস

উগ্রবাদী প্যালেস্টাইন সংগঠন হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে সংঘর্ষের বিষয়ে বিশ্ব মতাদর্শগত দিক দিয়ে বিভক্ত বলে মনে হচ্ছে। এমতাবস্থায় ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে বন্ধুত্বের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষভাবে মনে রাখা দরকার, এই বন্ধুত্বের সেতু তৈরি করেছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। ভারতের স্বাধীনতার ৯ মাস পর ইজরায়েলও একটি দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। বিগত ৭৩ বছরে ইজরায়েল ও ভারতের বন্ধুত্বে মতাদর্শগত সমর্থন রয়েছে। এই দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক স্নেহ ও বিশ্বাস বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত প্রবীণ প্রচারক হরি নারায়ণ পালকর ইজরায়েলের ইতিহাস নিয়ে একটি বই লিখেছেন। পালকরের বইয়ে মুগ্ধ হয়ে ইজরায়েল সে দেশে পালকারের নাম একটি রাস্তার নাম রেখেছে।
এ বিষয়ে বিশদে প্রবীণ সাংবাদিক সুধীর পাঠক বলেছেন, নিজেদের মাতৃভূমি থেকে দূরে থাকা সত্ত্বেও সমগ্র বিশ্বজুড়ে থাকা ‘ইহুদি জনগণ’ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাঁদের পরবর্তী নতুন বছর মাতৃভূমি ইজরায়েলে উদযাপন করবেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে, ‘ইহুদি জনগণ’ সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাঁদের নিজস্ব দেশ তৈরি করেছিল। ইজরায়েলের চিন্তাভাবনা এবং সঙ্ঘের আদর্শের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। তৎকালীন মহারাষ্ট্র প্রান্তে সঙ্ঘের কার্যবাহ নানা পালকর ইহুদি জনগণের ইতিহাস নিয়ে ‘ছল সে বল কি ওর’ নামক বই লিখেছিলেন। যে কোনও দেশের ধারণায় জমির টুকরো গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং জাতীয়তাবাদ মানুষের মনে থাকা আবশ্যিক। নিজের বইয়ে এটাই উল্লেখ করেছিলেন পালকর। পাঠক বলেছেন, ইজরায়েলিরা যখন এই বইটি সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন, তখন ভারতের ইজরায়েল দূতাবাসের এক কর্মকর্তা নানা পালকরের সন্ধানে মুম্বইয়ে অবস্থিত সঙ্ঘের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। যদিও, তার আগেই নানা পালকরের মৃত্যু হয়েছিল। পাঠক বলেছেন, নানা পালকরের লেখা বইয়ের অনুলিপি নিয়ে ফিরতে হয়েছিল ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে। কিন্তু, ইজরায়েল সরকার নিজেদের দেশের একটি রাস্তার নামকরণ করেছিলেন নানা পালকরের নামে, এভাবেই তাঁকে সম্মান দিয়েছিল ইজরায়েল সরকার।
পালকের স্মৃতি সমিতি নানা পালকরের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নানা পালকর স্মৃতি সমিতির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এই প্রতিষ্ঠান বিগত ৫ দশক ধরে রোগীদের নিরন্তর সেবা করে চলেছে। এই সমিতির মাধ্যমে দরিদ্র ও অভাবী রোগীদের স্বল্প হারে এবং বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হয়। সমিতির সেবামূলক কাজে মানুষ প্রতিনিয়ত উপকৃত হচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.