আইপিএলের (IPL 2024) ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। চলেও এসেছে ক্রোড়পতি লিগের দিনক্ষণ। চব্বিশের আইপিএল (IPL 2024) শুরু হতে চলেছে ২২ মার্চ থেকে। চলবে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত। গতবারের রানার্স ও একবারের চ্য়াম্পিয়ন গুজরাত টাইটান্স (Gujarat Titans) আগামী ২৪ মার্চ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (Mumbai Indians) বিরুদ্ধে সপ্তদশ আইপিএলের অভিযান শুরু করবে। সেই ম্য়াচে বছর একুশের বাঁ-হাতি উইকেটকিপার-ব্য়াটার রবিন মিনজ (Robin Minz) খেলবেন কিনা, তা একমাত্র সময়ই বলবে। তবে আইপিএল শুরুর আগেই চর্চায় রবিন। কেন চর্চায় এই ক্রিকেটার, কী তাঁর ইতিহাস, এই নিয়েই এই প্রতিবেদন।
এমএস ধোনি বলতে অজ্ঞান রবিন। পেয়েছেন ‘ঝাড়খণ্ডের ক্রিস গেইল’ও ‘নেক্সট ধোনি’র মতো তকমা। ছোটবেলায় রবিনের বাবা ফ্রান্সিস একদিন দেখেছিলেন যে, গিলি-ডান্ডা খেলায় ছেলে ডান্ডা দিয়ে বহু দূরে গিলি পাঠিয়েছে। যা দেখে বাবাই তাঁকে একটি কাঠের ব্য়াট বানিয়ে দিয়েছিলেন। ফ্রান্সিস তখন ভারতীয় সেনার ৯ নম্বর বিহার রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। নকল ব্য়াট নিয়ে কয়েক বছর খেলার পর রবিনের বাবা ফ্রান্সিসকে আসল ব্য়াট-বল কিনে দেন।এখন ফ্রান্সিস রাঁচির বীরসা মুন্ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্বে। এখান থেকেই শুরু রবিনের ক্রিকেটীয় যাত্রা।
তরুণতুর্কী বলতে যা বোঝায়, তিনি ঠিক তাই। সকলেই তাঁকে আগামীর তারকা হিসেবে দেখছেন। নিলামে রবিনের বেসপ্রাইজ ছিল ২০ লক্ষ টাকা। সেখান থেকে গুজরাত তাঁকে নিয়েছে মাথা ঘোরানো অঙ্কে। কোচ চঞ্চল ভট্টাচার্যের ছাত্রের জন্য় শুভমনের দল খরচ করেছে ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। ১৮ গুণ বেশি দামেই বিক্রি হয়েছেন রবিন। ক্রিকেটার নয় ফুটবল হওয়ার কথা ছিল। ফুটবলের জন্য়ই তিনি দিল্লি সাই-তে ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু দিনের দিন ছবি পাঠাতে না পারায় পরিকল্পনা বদলাতে হয় রবিনকে।
রবিন এমএস ধোনির অন্ধভক্ত। শুধু রবিনই নন, তাঁর বাবাও। কেন ধোনি রবিনের পরিবারের হৃদয়ে বিরাজ করেন? ফ্রান্সিস এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘কে ধোনির ফ্য়ান নয় বলুন তো, তবে ছেলের চেয়ে আমি ধোনির বড় ফ্য়ান। রবিনকে সেই ছোট থেকে কিটস ও খেলার সরঞ্জাম দিয়ে আসছেন ধোনি। সময়ে সময়ে পরামর্শ দিয়েছেন। অত বড় মানুষ ধোনি। তাও কী বিনম্র। আমাদের ওর বাড়িতে ডেকেছিলেন ধোনি। আমি ধোনিকে বলেছিলাম আপনি আমার নায়ক, উনি বলেছিলেন, যে বাবা বাচ্চার ক্রিকেট কেরিয়ারের এভাবে সমর্থন করে, সেই আসল নায়ক। আমাকে ধোনি বলেছিলেন, বাচ্চার জন্য় চিন্তা করবেন না। আমি দেখে নেব। এটা শুনেই অনুপ্রাণিত হয়ে গিয়েছিলাম।’
রাঁচির সনেক ক্রিকেট অ্যাকাডেমি চালান আসিফ হক, শিব গৌতম ও চঞ্চল ভট্টাচার্য। রবিনের কোচ আসিফ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কোভিডে যখন সব থেমে গিয়েছিল, তখন রবিন বসে থাকেননি। তিনি ভোর চারটের সময়ে ট্রেনিংয়ে আসতেন। সন্ধে পর্যন্ট ট্রেনিং করতেন। সেদিনই আসিফ বুঝে যান এই ছেলের ক্রিকেট খেলাই লক্ষ্য়। এখন দেখার আইপিএলে কী ফুল ফোটান ধোনি ভক্ত রবিন।