নদিয়া এবং পুরুলিয়া— অল্প সময়ের ব্যবধানে রাজ্যের দুই জেলায় একই সংস্থার দু’টি সোনার শোরুমে বড়সড় ডাকাতির ঘটনা ঘটল। সোমবার দুপুরে পুরুলিয়া শহরে গয়নার শোরুমে ঢোকে এক দল দুষ্কৃতী। দোকানের প্রায় সমস্ত গয়নাই লুট করে চম্পট দেয় তারা। সূত্রের খবর, গুলিও চলে। অন্য দিকে, প্রায় একই সময়েই নদিয়ার রানাঘাটে ওই একই সংস্থার শোরুমে ডাকাতি হয়। সেখানেও গুলি চলে। শোরুমের কর্মীদের মারধর করে প্রায় ৯০ শতাংশ গয়না লুট করে নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে রানাঘাটের চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এক জনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরও মিলেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, রানাঘাটের গয়নার বিপণিতে সোমবার দুপুরে তেমন ভিড় ছিল না। আচমকাই সেখানে কয়েক জন দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে। সশস্ত্র প্রহরীদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে শুরু হয় লুট। এক জন কর্মীর মাথায় বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। তার পর গুলি চালাতে চালাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে দুষ্কৃতীরা। ওই সময় পুলিশ বাধা দেয়।
ওই সোনার শোরুম সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ক্রেতা সেজে প্রথমে দু’জন পরে মোট ন’জন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লুট শুরু করে। দুষ্কৃতীদের মুখোশ ছিল না। প্রায় কুড়ি মিনিটের মধ্যে হিরে এবং সোনার প্রায় সমস্ত গয়না লুট করে নিয়ে চলে যায় ওই দল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, তিনটি মোটরবাইকে চেপে পালিয়ে যাওয়ার সময় রানাঘাট থানার পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের গুলির লড়াই শুরু হয়। এর পর চার জনকে ধরে ফেলে পুলিশ। উদ্ধার হয় একটি ব্যাগ। তাতে লুট হওয়া গয়নার একাংশ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। নদিয়ার পুলিশ জেলার সুপার কে কান্নান বলেন, ‘‘ডাকাতদলকে ধাওয়া করে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’
তবে পুরুলিয়ার শোরুমে লুটের ঘটনায় কোনও গ্রেফতারির খবর এখনও মেলেনি। তদন্তকারীরা মনে করছেন, কোনও নির্দিষ্ট একটি চক্র এই দুটো ডাকাতির পিছনে রয়েছে। তারা একই সংস্থার শোরুমকেই কেন ‘টার্গেট’ করল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মনে করা হচ্ছে, দীর্ঘ দিন ধরে ছক কষা হয়েছে ডাকাতির।
মাস কয়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে আনন্দপুরীর একটি গয়নার দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেখানে গুলি করে মারা হয় দোকানের মালিকের পুত্রকে। তার পর মঙ্গলবারের জোড়া ডাকাতির ঘটনায় শোরগোল শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ব্যবসায়ীরা।