আরজি কর দুর্নীতি মামলা: সন্দীপ-সহ পাঁচ জনের নামে আদালতে চার্জশিট জমা দিল সিবিআই

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় এ বার চার্জশিট জমা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সূত্রের খবর, শুক্রবার আলিপুর আদালতে ১০০ পাতার বেশি চার্জশিট জমা দিলেন তদন্তকারীরা। সঙ্গে ১০০০ পাতার নথিও জমা করেছেন তাঁরা। সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম রয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের। এ ছাড়াও এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া আরও চার জনের নামও চার্জশিটে রয়েছে। অভিযুক্তদের ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এ ছাড়াও দুর্নীতি দমন আইনের বিভিন্ন ধারা যুক্ত করা হয়েছে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রথম গ্রেফতার হয়েছিলেন সন্দীপ। টানা কয়েক দিন সিবিআই দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে এই মামলার সূত্র ধরে বিপ্লব সিংহ, আফসার আলি এবং সুমন হাজরাকেও গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা। এই মামলায় শেষ গ্রেফতার আশিস পাণ্ডে। তৃণমূলের এই ছাত্রনেতা সন্দীপের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত। শুধু তা-ই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি হাসপাতালে ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে এক চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনায় ‘মূল অভিযুক্ত’ হিসাবে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই। এ ছাড়াও এই মামলাতে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে সন্দীপ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই আবহেই প্রকাশ্যে আসে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ।

অভিযোগ উঠেছে, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে। বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনার নামে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছিল আরজি করে। সন্দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ‘ঘনিষ্ঠ’দের টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছিলেন। এই ঘটনার তদন্তের জন্য গত ১৬ অগস্ট রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছিল। নেতৃত্বে ছিলেন আইপিএস অফিসার প্রণব কুমার।

রাজ্য পুলিশের সিটের উপর আস্থা নেই, এই দাবিতে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তভার ইডিকে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের একক বেঞ্চ জানিয়েছিল, একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি আরও জটিল ও সময়সাপেক্ষ হতে পারে। এর পরেই সিবিআইকেই আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তভার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। তার পরেই আর্থিক দুর্নীতি মামলায় একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। হাসপাতালের একাধিক কর্তার বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.