রাজনৈতিক ক্ষমতা কায়েম করার একমাত্র পথ সংগঠনকে মজবুত করা। সংগঠন গোছানো না হলে উপর তলার যত আশীর্বাদ থাকুক না কেন কখনো সেটা সফলতার দরজায় পৌঁছাতে পারে না। পশ্চিমবঙ্গের ২১ এর নির্বাচন সম্ভবত সেই শিক্ষা দিয়েছিল বঙ্গ বিজেপিকে। বঙ্গ বিজেপি বা কেন্দ্রীয় বিজেপি বুঝতে পেরেছে ক্ষমতায় আসতে আর ক্ষমতায় টিকে থাকার অন্যতম রসদ হলো মজবুত সংগঠন। তাই সংগঠন গড়ে তুলতে যে কারিগরদের প্রয়োজন সেই কর্মীদের নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মানুষের দরবারে হাজির সুকান্ত। বাগুইআটি- কলকাতার রাজারহাট-গোপালপুর অঞ্চলে গৃহসম্পর্ক অভিযানে যোগ দিয়ে মোদী সরকারের উন্নয়নের গতিধারা তুলে ধরেন বিজেপি নেতা।
বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা, অনেক রাজ্যেই তারা ঘোড়া কেনা বেচা করে ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু এই কাজ যে ভবিষ্যতের জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ হয়েছে সেটা দাবি করতে পারেনি দল।কারণ বিভিন্ন জায়গায় সেই সরকার মুখ থুবড়ে পড়েছে, বা পরবর্তীতে ভোটের ফলাফল খারাপ হয়েছে। আর এস এসও বার বার বিজেপিকে সংগঠন মজবুত করে গড়ে তুলতে দিক নির্দেশ করেছে। সম্ভবত সেই কারণেই বাংলায় ক্ষমতায় আসতে কোনো শর্টকাট পথ নয়, বাংলার আনাচে কানাচে সংগঠন মজবুত করাতেই মন দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
সাম্প্রতিক অতীতে শোনা গেছে তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বের অফার ফিরিয়েছেন। তার লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনা। আর সেই লক্ষ্যে সুকান্ত মজুমদার যে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন সেটা তাঁর ইদানিং সময়কার একাধিক কর্মসূচি থেকে স্পষ্ট। দলের কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে তাদের নেতা নয় সঙ্গী হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। রাজ্যের যে প্রান্তেই কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন সুকান্ত ছুটে যাচ্ছেন। এছাড়াও রাজ্যের যেকোনো ইস্যুতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বঙ্গ বিজেপি। সর্বোপরি মানুষকে সবার উপরে গুরুত্ব দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে একের পর এক কর্মসূচি পালন করছেন সুকান্ত।
ছবি: স্থানীয় মন্দিরে।
গণতন্ত্রে মানুষ শেষ কথা বলে। তাই মানুষের দরজায় কড়া নাড়ছেন সুকান্ত। আজ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা কলকাতা উত্তর শহরতলীর কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাগুইআটিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেন সুকান্ত। তুলে ধরেন মোদী সরকারের কাজের খতিয়ানে। দাবি করে যদি বাঙালির কোনো প্রকৃত রাজনৈতিক দল থেকে থাকে সেটা একমাত্র বিজেপি। কারণ বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি। তিনি বলেন, “একমাত্র সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল, যেটা বাঙালি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সেটা হচ্ছে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেস বাঙালি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত দল হলেও তৃণমূল কংগ্রেস আসলে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে আসা দল, যে কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন একজন ব্রিটিশ- অ্যালেন অক্টোভিওম হিউম। ফলে বাঙালির প্রতিষ্ঠিত কোনো সর্বভারতীয় দল থাকলে সেটা বিজেপি, যা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের তৈরি করা। রাজনৈতিক পরিসরে যদি কোনও বাঙালির ছবি গোটা ভারতবর্ষে উঠে আসে সেটা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির। গোটা বিজেপির জন্য যার নাম সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিকভাবে গোটা বাঙালি জাতিকে ভারতবর্ষের সামনে পরিচিতি দিয়েছে বিজেপি। তাই বিজেপি প্রকৃত বাঙালির দল। মারাঠি, গুজরাটিরাও বলতে বাধ্য হয় শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি জিন্দাবাদ।”
মোদী সরকারের ৯ বছরের কাজের খতিয়ানে তুলে ধরতে গৃহ সম্পর্ক অভিযানে গিয়ে ঘরের ছেলে হয়ে ওঠেন সুকান্ত। বাড়ির ছোট ছোট শিশুদের সঙ্গে গল্প করেন, তাদের স্কুলের কথা, পড়াশুনার কথা জানতে চান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জনমানসে মিশে যান বঙ্গ বিজেপি নেতা।