দু’মাস ধরে চলা আইপিএল শেষ হয়েছে রবিবার। ১০ দলের লড়াই শেষে ট্রফি জিতেছে কেকেআর। হায়দরাবাদকে হারিয়েছে একপেশে ফাইনালে। প্রতিযোগিতার পর প্রতিটি দলকে নম্বর দিল আনন্দবাজার অনলাইন।
কলকাতা নাইট রাইডার্স (৯/১০)
প্রতিযোগিতার শুরু থেকে দাপুটে খেলেছে তারা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং— সব বিভাগেই টেক্কা দিয়েছে বাকিদের। মাত্র তিনটি ম্যাচে হেরেছে। অ্যাওয়ে ম্যাচে তাদের দাপট ছিল দেখার মতো। রান তাড়া করতে গিয়ে একটি ম্যাচেও হারেনি। যে দলের যাত্রাপথ এ রকম হয়, তাদের হাতেই ট্রফি মানায় বেশি। সেটাই হয়েছে কেকেআরের ক্ষেত্রে।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (৮/১০)
গত বার সবার নীচে শেষ করা হায়দরাবাদ এ বার নিজেদের পুরোপুরি বদলে ফেলেছিল। আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী হয়ে নেমেছিল। প্রতিযোগিতায় বার বার সেটা বোঝাও গিয়েছে। বোলিং দল থেকে এ বার তারা ব্যাটিং দল হয়ে উঠেছিল। আইপিএলে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের প্রথম দু’টি রেকর্ড তাদের দখলেই। কিন্তু ফাইনালে এসে গুটিয়ে গেল তারা।
রাজস্থান রয়্যালস (৬/১০)
এক সময় মনে হচ্ছিল প্রথম দল হিসাবে প্লে-অফে উঠবে রাজস্থান। কিন্তু গ্রুপ পর্বের শেষ দিকে ছন্দ হারায় তারা। হারে টানা চারটি ম্যাচে। প্লে-অফে উঠে এলিমিনেটরে জিতলেও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হারে। জস বাটলার চলে যাওয়ার পর গোটা দলকেই দিশেহারা দেখিয়েছে।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (৬/১০)
এ বারও আইপিএল অধরা আরসিবির। সবচেয়ে বেশি রান করে বিরাট কোহলি কমলা টুপি পেলেও বাকিরা কেউই নিজেদের সেরা জায়গায় নিয়ে যেতে পারেননি। বোলিং বিভাগ নিয়ে যত কম বলা যায় ততই ভাল। প্রথম দল হিসাবে ছিটকে যাওয়ার মুখ থেকে টানা ছ’টি ম্যাচ জিতে প্লে-অফে উঠেছিল বটে, কিন্তু এলিমিনেটরেই হারতে হয়েছে।
চেন্নাই সুপার কিংস (৬/১০)
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির থেকে দায়িত্ব পেয়েছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। নেতৃত্ব মোটের উপর ভালই দিয়েছেন। কিন্তু ধারাবাহিকতার অভাব ভুগিয়েছে চেন্নাইকে। সবাই মিলে একসঙ্গে দলকে জেতাতে পারেননি। বেশির ভাগ ক্রিকেটার বার বার ছন্দ হারিয়েছেন। এ ছাড়া মুস্তাফিজুর রহমান, মাথিশা পাথিরানাকে হারানোয় বোলিংও দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
দিল্লি ক্যাপিটালস (৫/১০)
প্রচুর চোট-আঘাত সামলাতে হয়েছে দলকে। ঋষভ পন্থ চোট সারিয়ে ফিরে দলকে ভাল নেতৃত্ব দিলেও প্লে-অফের যোগ্য করে তুলতে পারেননি। মুকেশ কুমার এবং কুলদীপ যাদবের চোট দিল্লিকে ভুগিয়েছে। তবে জেক ফ্রেজ়ার ম্যাকগার্কের মতো ক্রিকেটার উপহার দিয়েছে তারা। প্রতিষ্ঠিত করেছে অভিষেক পোড়েলকেও।
লখনউ সুপার জায়ান্টস (৪/১০)
কেএল রাহুলের অধিনায়কত্ব যেমন ভাল ছিল না, তেমনই সঙ্গ দেয়নি দলের ব্যাটিং বা বোলিং বিভাগ। আবেশ খানকে ছেড়ে দেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। তাঁর বদলি হিসাবে নেওয়া দেবদত্ত পাড়িক্কল কোনও ছাপ ফেলতে পারেননি। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার মাসুল দিতে হয়েছে লখনউকে।
গুজরাত টাইটান্স (৩/১০)
গত দু’বারের মধ্যে এক বার বিজয়ী এবং এক বার রানার্স-আপ হওয়া দল এ বার পয়েন্ট তালিকার নীচের দিকে শেষ করেছে। নেতৃত্ব পেয়েও শুভমন গিল ছাপ ফেলতে ব্যর্থ। রশিদ খান ছাড়া কেউ ভাল খেলতে পারেননি। ব্যাটার শুভমনও দাগ কাটতে পারেননি। মিলিত ভাবে যে প্রচেষ্টা গত দু’বার দেখা গিয়েছিল তা এ বার ছিল না।
পঞ্জাব কিংস (২.৫/১০)
শশাঙ্ক সিংহ, আশুতোষ শর্মা উপহার দেওয়া ছাড়া পঞ্জাব এ বার কিছুই করতে পারেননি। এমন কোনও ক্রিকেটার নেই, যাঁদের নিয়ে দু’টি লাইনও লেখা যায়। শিখর ধাওয়ান চোট পাওয়ার পর আর কেউ তাঁর জায়গা নিতে পারেননি। স্যাম কারেনকে অধিনায়ক করা ভুল সিদ্ধান্ত।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (১.৫/১০)
হার্দিক পাণ্ড্যকে অধিনায়ক করা এবং রোহিত শর্মাকে সরানো থেকেই সমালোচিত হয়েছে মুম্বই। মাঠেও তার ছাপ পড়েছে। গোটা প্রতিযোগিতাতেই রংহীন, দিশেহারা দেখিয়েছে মুম্বইকে। দায়িত্ব পেয়েও হার্দিক কিছু করতে পারেননি। রোহিত ব্যাট হাতে চেষ্টা করলেও তা যথেষ্ট ছিল। তিন বিভাগেই ব্যর্থ হয়েছে তারা।