আমেরিকান কংগ্রেসের ৭৫ জন সদস্য চিঠি দিয়ে দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রে মোদীর সঙ্গে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেন ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসঙ্গটি তোলেন। ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার উত্থান ঘটেছে বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। যদিও মোদীর সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের আগে বাইডেনের মুখে ভিন্ন সুরই শোনা গেল। প্রেসিডেন্ট জানালেন, ধর্মীয় বহুত্ববাদই ভারত এবং আমেরিকার মূল নীতি। এই দুই দেশ আগামী দিনে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এক যোগে কাজ করতে বদ্ধ পরিকর।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে চলেছেন জো বাইডেন। তার আগে তিনি ভারত এবং আমেরিকার বন্ধুত্বের কথাই তুলে ধরলেন। জানালেন, এই দুই দেশ, ‘এই দুই শক্তি’ মিলে একুশ শতকের পথ নির্ধারণ করবে। তিনি এও জানালেন, এই দুই দেশ আজ যে সিদ্ধান্ত নেবে, তার প্রভাব পড়বে পরবর্তী প্রজন্মের উপর। তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘আইনের সাম্য, ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় বহুত্ববাদ, আমাদের মানুষের বৈচিত্র্য— এই মূল নীতিগুলি আমাদের দুই দেশের দীর্ঘ দিনের ইতিহাসে অনেক বাধা সহ্য করেও টিকে গিয়েছে।’’ বাইডেন এও জানান, দুই দেশ স্বাস্থ্য পরিষেবা, জলবায়ু পরিবর্তন, ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আগ্রাসনের মতো বিষয় নিয়ে পাশাপাশি থেকে কাজ করবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টুইটেও দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হওয়ারই ইঙ্গিত মিলেছিল। তিনি বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে লিখেছিলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাতের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, আমাদের আলোচনা ভারত এবং আমেরিকার সম্পর্ক আরও মজবুত করবে।’’ পরে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে তিনি বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত, আমেরিকার সম্পর্ক। আমাদের দুই দেশের সংবিধানের শুরু ‘আমরা, নাগরিকেরা’। আমরা দুই দেশই নিজেদের বৈচিত্র নিয়ে গর্বিত। কোভিডের পর গোটা দুনিয়া নতুন পথে হেঁটেছে। সারা বিশ্বের উন্নয়ন, শান্তি, স্থিতিশীলতার জন্য আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।’’
গত ন’বছরে পাঁচ বার আমেরিকা সফর করেছেন। তবে মোদীর এ বারের সফরের গুরুত্ব একেবারেই আলাদা। আমেরিকার আইনসভার ৭৫ জন সদস্য (১৮ জন সেনেটর এবং ৫৭ জন হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের সদস্য) চিঠি দিয়ে দাবি করেছেন, বাইডেন যেন মোদীর কাছে ভারতে মানবাধিকারের উদ্বেগজনক অবস্থা নিয়ে সরব হন। বাইডেনের উদ্দেশে লেখা ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘ভারত-আমেরিকার মজবুত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। আমরা মনে করি, বন্ধুরাই পারে তাঁদের মতপার্থক্যের বিষয়গুলি নিয়ে সৎ এবং দ্বিধাহীন ভাবে আলোচনা করতে। তাই অন্য দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলির পাশাপাশি, মানবাধিকারের বিষয়টিও আপনি মোদীর সঙ্গে বৈঠকে উত্থাপন করুন।’’