‘ইঁদুরের গর্ত’ খোঁড়া হচ্ছে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে! নতুন কৌশল শ্রমিক-উদ্ধারের, কত দ্রুত কাজ এগোবে?

উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করতে নতুন কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। সোমবার থেকে সেখানে শুরু হয়েছে ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’। অর্থাৎ, শ্রমিকদের উদ্ধার করতে খোঁড়া হচ্ছে ‘ইঁদুরের গর্ত’!

সুড়ঙ্গের সামনের দিক থেকে যে অংশ খোঁড়া হচ্ছিল, খননযন্ত্র খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে এগোতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। সেই জন্যই বিশেষজ্ঞ খনিশ্রমিকদের ডাকা হয়েছে উত্তরকাশীতে। তাঁরা ‘ইঁদুরের গর্তের’ মতো খুঁড়ে খুঁড়ে শ্রমিকদের সঙ্গে ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করছেন।

আমেরিকান খননযন্ত্রটি সুড়ঙ্গের ভিতরে লোহার কাঠামোয় আটকে গিয়ে ভেঙে গিয়েছিল। তার টুকরো টুকরো অংশ সুড়ঙ্গ থেকে বার করার কাজ শেষ হয়েছে সোমবার। এর পর সুড়ঙ্গের ওই অংশে শুরু হয়েছে শাবল-গাঁইতি নিয়ে খোঁড়া। একে বলা হচ্ছে ‘ম্যানুয়াল ড্রিলিং’ অর্থাৎ, যন্ত্রের উপর ভরসা না করে হাত দিয়েই ধ্বংসস্তূপ খোঁড়ার কাজ চলছে।

বিভিন্ন খনি থেকে কাঁচামাল উত্তোলনের জন্য ‘ইঁদুরের গর্ত’ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। বিশেষত কয়লা খনিতে এই প্রক্রিয়া খুবই পরিচিত। এর মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ, অভিজ্ঞ শ্রমিকেরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে খনিতে নামেন। তাঁরা অল্প জায়গা নিয়ে সরু গর্ত খুঁড়তে খুঁড়তে এগিয়ে চলেন। ঠিক যেমন করে গর্ত খোঁড়ে ইঁদুর। প্রয়োজনীয় কয়লা তুলে আবার ওই একই পদ্ধতিতে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে শ্রমিকদের বার করতে সেই পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে।

‘ইঁদুরের গর্ত খনন’-এর জন্য আপাতত ১২ জন বিশেষজ্ঞ খনিশ্রমিককে উদ্ধারস্থলে আনা হয়েছে। তাঁরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে এগোবেন। সুড়ঙ্গের ভিতরে পৌঁছে এক জন দেওয়াল খুঁড়বেন, অন্য জন সেই ধ্বংসস্তূপ সংগ্রহ করবেন এবং তৃতীয় জন তা চাকা লাগানো গাড়িতে তুলে দেবেন। সেই গাড়ি ধ্বংসস্তূপ বহন করে সুড়ঙ্গের বাইরে নিয়ে যাবে। সামনের দিক থেকে ১০-১২ মিটার খোঁড়া বাকি আছে। এই পদ্ধতিতেই সেই খননকাজ চলবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই পথেও শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন উদ্ধারকারীরা।

একইসঙ্গে উপর থেকে চলছে উল্লম্ব খনন। পাহাড়ের উপর থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে মাটি খুঁড়ে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সেখানে মোট ৮৬ মিটার খুঁড়তে হবে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত খবর, উল্লম্ব ভাবে ৪২ মিটার খোঁড়া সম্পন্ন হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে উল্লম্ব খনন সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে আশাবাদী উদ্ধারকারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.