কোচবিহারের তিন বছর পুরনো একটি গণধর্ষণের মামলায় তিন আসামিকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত। শুক্রবার কোচবিহার জেলা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক আজিম খান এই নির্দেশ দেন।
২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর কোচবিহারের শীতলখুচি কলেজের এক ছাত্রীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তিন জনের বিরুদ্ধে। পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্তদের। প্রায় তিন বছর ধরে মামলা চলার পর অবশেষে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট তিন আসামিকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানার সাজা ঘোষণা করে। কোচবিহার জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী চঞ্চলকুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘২০২১ সালে ২১ ডিসেম্বর নির্যাতিতা যখন কলেজ যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর জামির হোসেন নামে পূর্বপরিচিত এক যুবক গাড়িতে ‘লিফ্ট’ দিতে চান। কলেজছাত্রী রাজি হয়ে তাঁর গাড়িতে ওঠেন। ভেবেছিলেন, তাড়াতাড়ি কলেজ পৌঁছে যাবেন। ওই গাড়িটি চালাচ্ছিল ফিরোজ আলম নামে এক যুবক। তাঁরা কলেজছাত্রীকে গাড়িতে তুলে কলেজের রাস্তায় না গিয়ে সোজা চলে যান বামনডাঙা এলাকায়।’’ সরকারি আইনজীবী জানান, বামনডাঙা এলাকায় জামিরের পিসির বাড়ি। সেখানে ছিল মামলার তৃতীয় অভিযুক্ত রাসেল মিয়াঁ। ওই বাড়িতে পৌঁছোনোর আগেই নির্যাতিতাকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে আনে তিন জন। পরে জামিরের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়।
আদালত সূত্রে খবর, প্রথমে জামিল কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে। সেই সময় ফিরোজ এবং রাসেল ভিডিয়ো করে। জামিল ধর্ষণ করার পর ওই ভিডিয়ো দেখিয়ে নির্যাতিতাকে ব্ল্যাকমেল করা হয়। ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ফিরোজ এবং রাসেল নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করে। নির্যাতনের পর কলেজছাত্রীকে আবার গাড়ি করে শীতলখুচি গার্লস হাই স্কুলের সামনে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়, ওই ঘটনার কথা কাউকে বললে ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওা হবে। নির্যাতিতা বাড়ি ফিরে মাকে সব কথা জানান। তার পর নির্যাতিতার মা শীতলখুচি থানায় অভিযোগ জানান। সেই তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। সরকারি আইনজীবী জানান, ওই মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রদানের পর আদালত তিন আসামিকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড এবং এক লক্ষ টাকা করে জরিমানার সাজা ঘোষণা করেছে।