মুছে গেল ৮৮ রানে অলআউটের ক্ষত। শাহবাজ আহমেদ (অপরাজিত ৭১ রান) এবং অভিষেক পোড়েলের (অপরাজিত ৫৩ রান) অসামান্য ইনিংসের সৌজন্যে বরোদাকে চার উইকেটে হারিয়ে রঞ্জি অভিযান শুরু করল বাংলা। শুধু তাই নয়, ইতিহাসেও নাম উঠল অরুণ লালের ছেলেদের। সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের নজির গড়লেন শাহবাজরা।
এতদিন রঞ্জি ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩২২ রান তাড়া করে জয়ের নজির ছিল বাংলার। ২০১৮-১৯ মরশুমের দিল্লির বিরুদ্ধে সেই রান তুলে জিতেছিল বাংলা। এবার সেই রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছেন অভিমন্যু ঈশ্বরণরা। সেইসঙ্গে রঞ্জির ইতিহাসেও সার্বিকভাবে চতুর্থ ইনিংসে ৩৪৯ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের নজির আছে হাতেগোনা কয়েকটি দলের।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
এবারের রঞ্জি ট্রফির প্রথম ম্যাচে কটকে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলা। ইশান পোড়েলের চার উইকেট এবং মুকেশ কুমারের তিন উইকেটের সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে ১৮১ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বরোদা। কিন্তু সেই সুবিধা নিতে পারেননি অভিমন্যুরা। চূড়ান্ত ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়েন তাঁরা। মাত্র ৮৮ রানেই অলআউট হয়ে যায় বাংলা। ৯৩ রানের লিড নিয়ে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৫ রানে অলআউট হয়ে যায় কেদার দেবধরের বরোদা। বাংলার সামনে ৩৪৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা খাড়া করে। হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকলেও প্রথম ইনিংসে বাংলার ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর মনোজ তিওয়ারিদের উপর সেভাবে কেউ বাজি ধরেননি।
যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো শুরু করেন অরুণ লালের ছেলেরা। প্রথম উইকেটে ৮৯ রান যোগ করেন সুদীপ ঘরামি এবং অভিমন্যু। ৮০ বলে ২৭ রান করে আউট হন সুদীপ। এক রান পরেই আউট হয়ে যান ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়। দিনের শেষে বাংলার স্কোর দাঁড়ায় দুই উইকেটে ১৪৬ রান। জয়ের জন্য রবিবার বাংলার ২০৩ রান দরকার ছিল। সেজন্য অভিমন্যু ও অনুষ্টুপ মজুমদারকে বড় ইনিংস খেলতে হত। কিন্তু শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলা। দলের এক রান হতে না হতেই আউট হয়ে যান বাংলার অধিনায়ক। তিনি করেন ৭৯ রান। তারপর অনুষ্টুপ ও সুদীপ চট্টোপাধ্যায় বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু এক রানের ব্যবধানে দু’জন আউট হয়ে যাওয়ায় প্রবল চাপে পড়ে যায় বাংলা। মনোজদের স্কোর দাঁড়ায় পাঁচ উইকেটে ১৭৬ রান। সেখান থেকে বাংলার ইনিংসের হাল ধরেন মনোজ এনং শাহবাজ। কিন্তু সেট হয়েও ৩৭ রান করে আউট হয়ে যান মনোজ।
বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক যখন আউট হন, তখনও জয়ের জন্য ১০৭ রান দরকার ছিল। হাতে ছিল চার উইকেট। কাজটা কঠিন হলেও অসম্ভব ছিল না। আর সেই কঠিন কাজটা সহজ করে তোলেন শাহবাজ এবং অভিষেক। দু’জনেই স্বাভাবিক ছন্দে খেলে যেতে থাকেন। কখনওই বরোদার বোলারদের মাথার উপর চেপে বসতে দেননি। বরং চাপে ফেলে দেন বরোদাকে। শেষপর্যন্ত চার উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেন শাহবাজ এবং অভিষেক। সপ্তম উইকেটে ১৩৪ বলে ১০৮ রান যোগ করেন তাঁরা। ১০০ বলে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন শাহবাজ। অর্ধশতরান করেন অভিষেকও। যে অভিষেক রঞ্জি অভিষেকেই নিজের জাত চিনিয়ে দিলেন।