কংগ্রেস ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন সকালে। দুপুরের মধ্যেই শিবসেনার একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠীতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিলেন মিলিন্দ দেওরা। দলীয় গৈরিক পতাকা হাতে তুলে দিয়ে তাঁকে দলে স্বাগত জানান মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। ঘটনাচক্রে, রবিবারই মণিপুর থেকে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এই প্রেক্ষাপটে মিলিন্দের দলবদলকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মিলিন্দ যে দলবদলের কথা ভাবছেন, তার ইঙ্গিত মিলেছিল আগেই। যে দক্ষিণ মুম্বই লোকসভা কেন্দ্র থেকে তিনি লড়েন, সেখানে গত দুই লোকসভা ভোটেই দেওরা ধরাশায়ী হয়েছেন শিবসেনা প্রার্থী অরবিন্দ সাওয়ান্তের কাছে। অরবিন্দ শিবসেনার উদ্ধব শিবিরের নেতা। ফলে আসন্ন লোকসভা ভোটে ওই কেন্দ্র থেকে মুরলী দেওরার ছেলের টিকিট পাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। ফলে অস্তিস্ব টিকিয়ে রাখতে দলবদল তাঁকে করতেই হত বলেও মনে করছেন অনেকে। রবিবার সকালে মিলিন্দ এক্স হ্যান্ডেলে বার্তা দেন, কংগ্রেসের সঙ্গে ৫৫ বছরের পারিবারিক সম্পর্কে ইতি টানছেন তিনি। তখনই পরিষ্কার হয়ে যায়, শিন্ডে শিবিরেই যাচ্ছেন তিনি। দুপুরে আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই বদল সূচিত হল। শিবসেনার দলীয় পতাকা মিলিন্দের হাতে তুলে দিয়ে তাঁকে দলে স্বাগত জানালেন মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে।
রবিবার কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের বার্তা দেওয়ার পর বাড়ি থেকে বেরোতেই সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন মিলিন্দকে। তখন ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে জানিয়েছিলেন, তিনি উন্নয়নের পথে হাঁটার স্বার্থেই কংগ্রেস ছেড়েছেন। তার পরেই স্ত্রী পূজাকে নিয়ে প্রভাদেবী এলাকার সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরে পুজো দিতে চলে যান। কংগ্রেসের নেতা অধুনা প্রয়াত মুরলী দেওরার ছেলে মিলিন্দ। মুরলী টানা ৪০ বছর দক্ষিণ মুম্বই লোকসভার সাংসদ ছিলেন। ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে বাবার ছেড়ে দেওয়া সেই দক্ষিণ মুম্বই কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের প্রতীকে জেতেন মিলিন্দ। মনমোহন জমানায় পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন। কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হত মিলিন্দকে। মূলত, তাঁর মতো কয়েক জন নেতাকেই কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছিল একটা সময়। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে আর ভোটে জিততে পারেননি মিলিন্দ। ২০১৪ এবং ২০১৯— দু’বারই তিনি হারেন শিবসেনার অরবিন্দ সাওয়ান্তের কাছে। সেই মিলিন্দই কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিলেন শিবসেনার শিন্ডে শিবিরে।