প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল তিনিই লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’র আনা অনাস্থা বিতর্কের সূচনা করবেন। কিন্তু কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীকে মঙ্গলবার সেই ভূমিকায় দেখা গেল না। তাঁর পরিবর্তে লোকসভার রীতি মেনে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস জমা দেওয়া অসমের কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈকে বিতর্কের প্রথম বক্তা হিসাবে দেখা গেল।
কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার বিরোধী শিবিরের শেষ বক্তা হিসাবে দেখা যাবে রাহুলকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জবাবি বক্তৃতার ঠিক আগেই অনাস্থা বিতর্কে অংশ নিতে পারেন ওয়েনাড়ের সাংসদ। তবে দলেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, তবে অনাস্থা বিতর্কের বক্তাদের তালিকায় নাম থাকায়, সংসদীয় বিধি মেনে মঙ্গলবার বা বুধবারেও বক্তৃতা করতে পারেন রাহুল।
গত ২৩ মার্চ ‘মোদী’ পদবি অবমাননা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে দু’বছর জেলের সাজা পাওয়ায় সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গিয়েছিল রাহুলের। শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্টের তরফে সেই শাস্তির নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। সেই স্থগিতাদেশের ৪৮ ঘণ্টা পরেই রাহুলকে তাঁর সাংসদ পদ ফিরিয়ে দেন লোকসভার স্পিকার। সোমবার দুপুর ১২টার কিছু আগে লোকসভায় এসেছিলেন। বিকেলে ‘ইন্ডিয়া’ সূত্রে জানা গিয়েছিল, মঙ্গলবার বিরোধীদের তরফে অনাস্থা বিতর্কের সূচনা করবেন কেরলের ওয়েনাড়ের সাংসদ পদে প্রত্যাবর্তন করা রাহুল।
মঙ্গলবার সকালে লোকসভা সচিবালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুলাই অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস জমা দেওয়া অসমের কংগ্রেস সাংসদ গৌরব ‘প্রারম্ভিক বক্তা’ হিসাবে রাহুলের নাম জমা দিয়েছেন। কিন্তু দুপুর ১২টায় অনাস্থা বিতর্ক শুরুর পরেই জানা যায়, সংসদীয় রীতি মেনে বিরোধী জোটের তরফে বিতর্কের সূচনা করবেন গৌরব। যা নিয়ে কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী-সহ কয়েক জন বিজেপি সাংসদ খোঁচাও দেন কংগ্রেসকে। জোশী বলেন, ‘‘হঠাৎ কী হল? আমরা তো ওঁর (রাহুল) কথা শুনব বলেই বসে রয়েছি!’’ তবে মঙ্গলবার বক্তৃতা না-করলেও অনাস্থা বিতর্কে বক্তাদের তালিকায় রাহুলের নাম রয়েছে।
কেন অনাস্থা বিতর্কের সূচনা-বক্তৃতায় রাহুলের নাম তুলে ধরেও ‘পিছু হটল’ বিরোধীরা? কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কৌশলগত কারণেই বৃহস্পতিবার মোদীর জবাবি বক্তৃতার ঠিক আগে অনাস্থা বিতর্কে বিরোধী শিবিরের শেষ বক্তা হিসাবে রাহুলের নাম ভাবা হচ্ছে। উদ্দেশ্য, বিজেপি-বিরোধী জোটের ‘মুখ’ হিসাবে তাঁকে তুলে ধরা। সে ক্ষেত্রে লোকসভা ভোটের আগে ‘মোদী বনাম রাহুল’ লড়াই নতুন মাত্রা পাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন।