R G Kar Incident: ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নির্যাতিতার হাড় ভাঙার কোনও প্রমাণ মেলেনি! তাহলে, ঠিক কী ঘটেছিল?

বড় আপডেট এল আরজি কর-কাণ্ডে। জানা গেল, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নির্যাতিতার হাড় ভাঙার কোনও প্রমাণ মেলেনি। সূত্র লাল বাজার। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আজই নমুনা পাঠানো হয়েছে। আজ ময়না তদন্তকারীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মোবাইল ডেটা এক্সট্রাকশনের জন্য পাঠানো হয়েছে।

আজ, সোমবার ৭ জন জুনিয়র চিকিৎসককে জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই সেদিন অন ডিউটি ছিলেন। এঁদের ৪ জন একসঙ্গে ডিনার করেন। প্রাথমিক ভাবে ঘটনার দিন ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা যুক্ত, মূলত সে বিষয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, আর কারও যোগ আছে কিনা, দেখা হচ্ছে। আরও কেউ আছে কিনা, কেউ ষড়যন্ত্রে যুক্ত কিনা, সন্দেহ ভিতরে আরও কেউ থাকতে পারে কিনা, সেইগুলি নিশ্চিত করতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এর পরে অন্য ফ্লোরে যাঁরা ছিলেন তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অন্য ফ্লোর-সহ ওই ফ্লোরে গত ১ মাসের গতিবিধি দেখার জন্য ৩০ দিনের সিসিটিভি খতিয়ে দেখা হবে। 

প্রসঙ্গত, এবার তদন্তের স্বার্থে বাড়ানো হল সিট সদস্যের সংখ্যা। একজন ডিসি-সহ ৫ জন পুলিস অফিসারকে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ৫০ জন অফিসারকেও যুক্ত করা হয়েছে। যাঁরা তিন শিফ্টে ভাগ হয়ে তদন্তে সহযোগিতা করবেন।

উল্লেখ্য, গ্রেফতার হওয়া সঞ্জয়ের বেশ কিছু তথ্য জানা গিয়েছে আগেই। সামান্য সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েও সে সরকারি বাইক ব্যবহার করত, সে সরকারি গাড়িও ব্যবহার করত, অবলীলায় থাকত পুলিস ব্যারাকে। ভয়ংকর প্রভাবশালী বলে সে পরিচিত ছিল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আরজি করে সর্বত্র ছিল তার অবাধ যাতায়াত! এমন এমন জায়গায় সে অবাধে ঘোরাফেরা করত যা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হত না। 

ডিউটি থাকলে সিভিক ভলান্টিয়াররা থানা বা ইউনিটের বাইক ব্যবহার করতে পারেন। তবে তা তাঁদের নামে অ্যালট হয় না। তাঁদের নিজেদের নামে সরকারি বাইক বরাদ্দ হওয়ার কথাও নয়। অথচ সঞ্জয়ের নামে বরাদ্দ হয় বাইক। সিভিক ভলান্টিয়ারদের পুলিস ব্যারাকেও থাকার কথা নয়, নিয়ম নেই। অথচ দিনের পর দিন সঞ্জয় কী ভাবে চতুর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাকে থাকত? উঠছে প্রশ্ন। এবং প্রশ্নের এখানেই শেষ নয়। পুলিস সংগঠনের কাজের কথা বলে অনেক সময় সে ব্যবহার করত পুলিসের গাড়িও। খাতায়-কলমে কলকাতা পুলিসের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পুলিস সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল সঞ্জয়। পুলিস সংগঠনের হয়েই কাজ করত সে।

জানা গিয়েছে, ৫ অগস্ট পশ্চিম মেদিনীপুরের সালুয়াতে পুলিস ওয়েলফেয়ার কমিটির মিটিং ছিল, সেটি সেরে ৮ অগস্ট রাতেই পুলিস লেখা সাদা রঙের বাইকে আরজিকর ফেরে সঞ্জয়। তখন রাত ১১টা। এর পরে সে বেরিয়ে যায়। তারপর মদ্যপান করে এবং আবার আরজি করে ঢোকে। এবং তার পরের ঘটনা সকলে জানে। সেমিনার হলে গিয়ে মেডিক্যাল ছাত্রীর সঙ্গে ওই নৃশংস কাণ্ড ঘটায় সে। আশ্চর্য হল, ঘটনার পরে খুব নির্বিকার ছিল সে। ঘটনার পরে সে পুলিস ব্যারাকে ফিরে আসে, এখানে সে মদ খায় এবং ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন সকালে যথারীতি ঘুম থেকে ওঠে এবং নির্বিকার ভাবে জামা-ট্রাউজার্স কাচা-ধোওয়া করে। ততক্ষণে আরজি করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে, কিন্তু সঞ্জয়ের মধ্যে কোনও উত্তেজনা দেখা যায়নি। 

এদিকে রবিবারই আরজি করে ঘটনার জেরে মহিলা নিরাপত্তায় আরও জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা পুলিস কমিশনার। হাসপাতাল, স্কুল, মেডিকেল কলেজ, হস্টেলে নারী নিরাপত্তায় বাড়তি নজর। মহিলা নিরাপত্তায় পুলিসকে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিলেন তিনি। কমিশনের বার্তা, সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ কোনো পুলিসকর্মী আইন ভাঙলে কোনো মতেই তা বরদাস্ত করা হবে না। তাদের প্রতি কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। শহরের পুলিসবাহিনীর উদ্দেশ্যে কমিশনারের মন্তব্য, আরজি কর হাসপাতালের মর্মান্তিক এবং অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের মহিলাদের সুরক্ষার প্রতি অতিরিক্ত সতর্ক হওয়া দরকার। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জিরো টলারেন্সের নীতি নিতে হবে! ঘটনার জেরে বাহিনীর উদ্দেশে ১৫ দফা নির্দেশও দিয়েছেন কমিশনার বিনীত গোয়েল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.