জমি জটের জেরে আটকে রয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নয়নমূলক কাজ । পর্যাপ্ত রুমের অভাবে চালু হচ্ছে না ইনডোর পরিষেবা। মূল বিল্ডিং ছাড়া বাকি সমস্ত বিল্ডিং ভগ্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে । নেই সীমানা প্রাচীর । এই সুযোগে রাতের অন্ধকারে মদ জুয়ার আড্ডা বসছে হাসপাতাল চত্বরে । চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে মদের বোতল, গ্লাস । সমাজবিরোধীদের আস্তানা হয়ে উঠেছে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র । ঘটনা পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের বেলকুঁড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের।
প্রায় ১৯৭০ এর দশকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য মৌখিকভাবে প্রায় দেড়শ ডিসিমেল জমি দান করেছিলেন বেলকুঁড়ি গ্রামের এক পরিবার । সেই সময় গড়ে উঠেছিল একের পর এক বিল্ডিং । চালু হয়েছিল বেলকুঁড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র । আশপাশের প্রায় ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের ভরসা সেই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। অ্যালোপাথি এবং হোমিওপ্যাথি উভয় ধরনের চিকিৎসা হয় । রয়েছে ইনডোর পরিষেবা । অ্যালোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথি বিভাগে ২ জন চিকিৎসক, ৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স, ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। নিত্যদিন শতাধিক রোগীর চিকিৎসা হয়ে থাকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ।
কিন্তু বর্তমানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেই জমি দাবি করে বসেছেন জমিদাতা পরিবারের বর্তমান প্রজন্মরা। হয় চাকরি, না হয় জমির বিনিময়ে টাকার দাবি করেছেন তারা । এমত অবস্থায় থমকে গিয়ে হাসপাতালের উন্নয়নমূলক কাজ । নইনতুন করে বিল্ডিং নির্মাণ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সীমানা প্রাচীর দিতেও বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। হাসপাতালের ভেতরে একাধিক বেড মজুত করা থাকলেও নতুন বিল্ডিংয়ের অভাবে বেড পরিষেবা চালু হয়নি । এমত অবস্থায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো বেহাল হয়ে পড়েছে ।
গ্রামবাসীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্র বাঁচাও কমিটি গঠন করেছেন। বৈঠক করেছেন। আন্দোলনে নেমেছেন বার বার । জমি জট কাটিয়ে তোলা এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোর উন্নয়নের দাবি জানিয়ে একাধিবার জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের দ্বারস্থও হয়েছেন । কিন্তু সমাধান হয়নি কিছুই। জমি দাতা পরিবার তাদের দাবিতে অনড়। এমত অবস্থায় উন্নয়নের অভাবে ধুঁকছে ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র।